একদিকে মানবিকতা, অন্যদিকে সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার পাশাপাশি সমস্যাটি বিশ্ব দরবারে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরার সাফল্য বিশ্বমহলে বাংলাদেশ সাহস আর প্রশংসার জায়গা করে নিয়েছে বলে সাবেক কূটনীতিকরা মন্তব্য করেছেন।
মানবিক সংকটে নানা ঝুঁকির মধ্যেও নির্যাাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে তুলে ধরার পরামর্শও দিয়েছেন তারা।
সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, যে মানুষগুলোকে অামরা আশ্রয় দিয়েছি এটি অান্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশংসিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান করেছেন এই কাজে সহায়তার জন্য। রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসন বাংলাদেশ পারবে কি না সেটি চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে। যদি চেষ্টার বাইরে বাড়তি চেষ্টা লাগে তার জন্য আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সমর্থন লাগবে।
তবে সমস্যার সমাধানে ভারত, চীন ও রাশিয়াকে নিজেদের দিকে টানার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির। তিনি বলেন, মানবিক দিক থেকে সিদ্ধান্ত খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা কষ্টে আছে বলে আমাদের কাছে এসেছে আমরা আশ্রয় দিচ্ছি, যতদিন পর্যন্ত তারা ফিরে না যায় তাদের ফিরে যাওয়ার সম্ভবনায় সচেষ্ট হতে হবে এবং তাদের ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।
সাবেক কূটনীতিকরা মনে করছেন, কূটনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশ সঠিক পথে হাঁটলেও অভ্যন্তরীণভাবে দ্রুত রোহিঙ্গাদের পরিচয় নিবন্ধিত না করলে মিয়ানমার পরে অনুপ্রবেশকারীদের নিজেদের নাগরিক বলে স্বীকার নাও করতে পারে।
মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পারলে বাংলাদেশ আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকিতে পড়বে বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
সন্ত্রাস দমনের নামে যুগের পর যুগ নির্মম নির্যাতন চলছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর। সম্প্রতি এমন নির্যাতনের শিকার হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে বিভিন্ন হিসাব অনুযায়ী এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে প্রায় ২ লাখ শরণার্থী। এছাড়া এখনও বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে বহু রোহিঙ্গা। এমন মানবিক সংকটে নানা ঝুঁকির মধ্যেও নির্যাাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বদরবারে প্রশংসা কুড়িয়েছে বাংলাদেশ।