মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রোহিঙ্গা নির্যাতনের অভিযোগে নিন্দা প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ। ওই প্রস্তাবে রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন, ধর্ষণ ও আটক অবস্থায় হত্যার মতো বিভিন্ন অভিযোগের কঠোর নিন্দা জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে প্রস্তাবটি পাস হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের রাখাইন, কাচিন ও শান রাজ্যে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে জাতিগত বিদ্বেষ মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এই নিন্দা প্রস্তাবকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাবের ফলে মিয়ানমারের অমানবিক কাজের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত সৃষ্টি হবে।
তবে এর কিছুদিন আগেও রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে আন্তর্জাাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছিল মিয়ানমার। এরপরও তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। আদালতসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দেখানোর উদ্দেশে ওই সময় দেশটির একটি প্রতিনিধি দল এসেছিল কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। কিন্তু তারা রোহিঙ্গাদের সেখানে নেয়ার ব্যাপারে রাজি করাতে সক্ষম হয়নি।
রোহিঙ্গাদের দাবি ছিল, তাদের নাগরিকত্ব এবং সব ধরনের নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করতে পারেনি মিয়ানমার। মিয়ানমারের অধিবাসী হয়েও সেখানকার নাগরিকত্ব তারা কেন পাবে না? এমন প্রশ্নের সদুত্তর ওই প্রতিনিধি দল দিতে না পারায় লোকদেখানো ওই কার্যক্রম সফল হয়নি।
জাতিসংঘ এবার রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত বিদ্বেষমূলক নিপীড়ন থামাতে জরুরি ব্যবস্থা নিতে এই নিন্দা প্রস্তাব আনে। এই নিন্দা প্রস্তাবের পর মিয়ানমার আরও সংযত হয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে উদ্যোগী হবে বলে আমাদের আশাবাদ। নাহলে শুধু নিন্দা প্রস্তাবে সীমাবদ্ধ না থেকে সংকট মোকাবিলায় জাতিসংঘকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে যথাযথ কূটনৈতিক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।