মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর সহিংসতার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন দ্রুত ও পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন না হহলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ এবং সমাজের ওপর বোঝা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বাসস’কে বলেন: বর্তমানে খাদ্য, স্বাস্থ্যসেবা, আশ্রয়, পানি ও স্যানিটেশনসহ জরুরি প্রয়োজনগুলো দাতাদের সহায়তায় পূরণ করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাম্প্রতিক প্রতিবেদন উল্লেখ করে তিনি বলেন: দাতাদের সহায়তা যদি হ্রাস পায়, তাহলে বাংলাদেশের ওপর রোহিঙ্গাদের বোঝা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
ড. জাহিদ হোসেন বলেন: ধারণা করা হচ্ছে কর্তৃপক্ষ দেশীয় ও বিদেশের সম্পদ থেকে এসব চাহিদা পূরণ করবে। আগামী ছয় বছরে অভ্যন্তরীণভাবে উচ্চসুদে প্রায় ৪৪০ বিলিয়ন টাকা সংগ্রহ করতে হবে। অন্যদিকে বিদেশ থেকে এক বিলিয়নের কিছু বেশি মার্কিন ডলার ছাড়হীন শর্তে ঋণ নিতে হবে। এছাড়াও বর্ধিত চাহিদা মিটাতে আমদানি প্রবৃদ্ধি ৮ থেকে ৯ শতাংশে বৃদ্ধি পেতে পারে।
যুক্তরাজ্যের বর্নমাউথ ইউনিভার্সিটির জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মেহেদি চৌধুরী বলেন: মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে অবস্থান দেশটির সরকারের উপর বিরাট আর্থিক বোঝা হিসেবে চেপে বসেছে।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে তার সাম্প্রতিক সফর থেকে তিনি বলেন: বিভিন্ন পর্যায়ে ক্যাম্পগুলোর ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ সরকারের বাৎসরিক ব্যয় দাঁড়াবে ১৫.২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ১৭শ’ মার্কিন ডলার মাথাপিছু আয়ের বাংলাদেশের জন্য এটা বিরাট একটি অঙ্ক বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মিয়ানমারের নিপীড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এর আগেও ১৯৭৮, ১৯৯২ এবং ২০১২ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। তবে ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে মিয়ানমারের বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা ব্যাপক হারে এবং সর্বাধিক সংখ্যক প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশয় নেয়।