রোহিঙ্গা ইস্যুতে আবারও বাংলাদেশের অবস্থান পরিস্কার করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ নামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিবন্ধে তিনি লিখেছেন: বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য যতটুকু করা সম্ভব করবে, এবং তাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গেও কাজ করবে; কিন্তু অবশ্যই আগে বাংলাদেশকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যকে আমরা সঠিক বলে মনে করি। জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে প্রাণ বাঁচাতে গত আগস্ট মাস থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। এ আশ্রয়দান মানবিকতার আহ্বানে সাড়াদান যেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতা দেখিয়ে করেছেন। এখন তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে হবে যা যুক্তিসঙ্গত। এজন্য বাংলাদেশ কঠোর পরিশ্রম করলেও মিয়ানমারের অস্থিতিশীল সময়ে ফেরত পাঠানো ‘অন্যায় এবং অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত’ বলে ইতোমধ্যে মামাবাড়ির আবদার করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা। বাংলাদেশের সহায়তা সারাবিশ্বে প্রশংসিত হলেও কিছু কিছু মহল বাংলাদেশে কেন সব রোহিঙ্গাকে স্থান দেওয়া হচ্ছে না বলে সমালোচনা করছে। তারা এমনকি এটাও বলছে যে কেন তাদের বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেওয়া হবে না! এটা মানবিকতার অভাবের কারণে হচ্ছে না, বরং বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে দেশের নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে বলে সাফ জানিয়েছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। পূর্বের মতো আমরা আবারও বলতে চাই, মানবিক সংকটে রোহিঙ্গাদের সাময়িক সময়ের জন্য সহায়তা করা সম্ভব, কিন্তু আজীবন সম্ভব নয়। এর বদলে মিয়ানমারের রাখাইনে স্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি এবং বজায় রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের নয়, এটা মিয়ানমারের সমস্যা। তাই মিয়ানমারকেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থা এবং দেশ এটা স্বীকার করে নিয়েছে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে রোহিঙ্গাদের এখানে রাখা হলে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের এই সময়ে তাদের ছদ্মবেশে সন্ত্রাসীরা যে এখানে ঢুকে পড়বে না এবং বিশেষ করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন বাড়বে না, তার নিশ্চয়তা নেই। বাংলাদেশের মতো মধ্যম আয়ের একটি দেশে দীর্ঘদিন তাদের রাখা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই রোহিঙ্গাদের জন্য মামাবাড়ির আবদারের সুরে মায়াকান্না না করে তাদেরকে যথাযথ মর্যাদায় দ্রুত ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে মানবিক সংকট অবসানে অবদান রাখতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং সংস্থাকে আহ্বান জানাই।