মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের উপর জাতিগত নিধন হয়েছে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গাদের উপর চলমান নিপীড়ন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন একথা বলেন।
সেনাবাহিনীর অত্যাচারে রোহিঙ্গাদের জীবনে সীমাহীন ভোগান্তি নেমে এসেছে উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে টিলারসন বলেন: রোহিঙ্গাদের উপর যে ভয়ঙ্কর নির্যাতন চালোনো হয়েছে তা ভাষায় বর্ণনা করা কঠিন।
‘এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত এবং বিষয়াবলী সতর্কতার সঙ্গে বিশ্লেষণ করলে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় যে উত্তর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর জাতিগত নিধন হয়েছে। যারা এই নিধন পরিচালনা করেছে, তাদেরকে অবশ্যই দায় দিতে হবে।’
মিয়ানমারের উপর সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেছেন টিলারসন।
রোহিঙ্গাদের উপর জাতিগত নিধন হচ্ছে কি না বিষয়টি ‘নির্ণয়’ করতে ট্রাম্প প্রশাসনের এক দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া শেষে টিলারসনের কাছ থেকে এই বক্তব্য এলো।
গত সেপ্টেম্বরেই রোহিঙ্গাদের উপর চলমান নিপীড়নকে জাতিগত নিধনের টেক্সট বুকের দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করে জাতিসংঘ। কিন্তু এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আরও তথ্য-উপাত্ত প্রয়োজন রয়েছে বলে তখন উল্লেখ করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে গভীরভাবে সচেতন রয়েছে বলেও জানানো হয়েছিল।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন মিয়ানমার সফরে গিয়ে বলেছিলেন যে রোহিঙ্গা সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এখন নিষেধাজ্ঞা জারি করার বিষয়টি যুক্তিযুক্ত নয়। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।
মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের শিকার হয়ে গত আগস্ট থেকে ৮ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এই চিত্রকে খুবই ভয়াবহ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।