শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার চেয়ে ১০ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে মাঠে নামতে হচ্ছে, আরেকটি হার কোথায় ঠেলে দেবে হিসাব কষা সহজ। এমন সময় প্রতিপক্ষ এখন পর্যন্ত স্প্যানিশ টেবিলের রেলিগেশন অঞ্চলে থাকা মালাগা। রিয়াল মাদ্রিদ কিনা তাদের বিপক্ষেই পয়েন্ট হারাতে বসেছিল! পয়েন্টটা হারাতে হয়নি শেষপর্যন্ত, সেটা হলে রোনালদোর যে মুখ দেখানোই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াত! খলনায়ক হতে হতে অপবাদটা আবার নায়ক হয়েই মিটিয়েছেন সিআর সেভেন। তার জয়সূচক গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে রিয়ালও।
শনিবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মালাগার বিপক্ষে ৩-২ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। জিনেদিন জিদানের দল বার্সার সঙ্গে ব্যবধানটা ৭ পয়েন্টে নেমে আনার সঙ্গে উঠে এসেছে পয়েন্ট টেবিলের তিনে। ১৩ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট লস ব্ল্যাঙ্কোসদের। অবশ্য রোববার রাতেই সেটা বাড়িয়ে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন মেসি-সুয়ারেজরা। সেজন্য টেবিলের দুইয়ে থাকা ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে শক্ত পরীক্ষাও দিতে হতে পারে আর্নেস্টো ভালভার্দের শিষ্যদের।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল উৎসব করলেও লিগে ধুঁকছে রিয়াল। মালাগার বিপক্ষেও শুরুতে সেটার ছাপ থাকল। তবে গোলও এসেছে জলদিই। ৯ মিনিটে খাতা খোলেন করিম বেনজেমা। গোলটা অবশ্য লিগে গোলখরায় থাকা রোনালদোরই হতে পারত! মার্সেলোর দারুণ এক ক্রসে রোনালদো মাথা ছুঁয়ে দিলে ক্রসবার দুর্ভাগ্যে পড়ে, সেটি ফেরত এলে ওঁত পেতে থাকা বেনজেমা জালে জড়িয়ে দেন।
সমতা ফেরাতে সময় নেয়নি অতিথিরাও। ১৮ মিনিটে টনি ক্রুস নিজেদের বক্সের সামান্য বাইরে ব্যাকপাস দিয়ে দেখলেন সাদা জার্সিধারী কেউ নেই বলটা নিরাপদ দূরে ঠেলার। সুযোগটা নিতে ভুল করলেন না কেকো, নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঠেলে দিলেন ডিয়েগো রোল্যানের দিকে, সমতা!
চলতি লিগে প্রতিপক্ষের মাঠে যেয়ে প্রথম গোলের দেখা পাওয়া মালাগার খুশিটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তিন মিনিট পরই শাপমোচন করেন ক্রুস, পূর্ণদৈর্ঘ্য সহযোগিতায় কাসেমিরো। ক্রুসের মাপা কর্নার থেকে ভেসে আসা বলে মাথা ঠেকিয়ে আবারও রিয়ালকে এগিয়ে দেন কাসেমিরো।
মধ্যবিরতির পর ফিরে অবশ্য ধাক্কাই খায় স্বাগতিকরা। ৫৮ মিনিটের গোলে মালাগার জন্য থাকল আবার প্রথম গোলের মত ভাগ্যের ছোঁয়া। নিজেদের বক্সের সামান্য বাইরে রাফায়েল ভারানের শিশুতোষ ভুলে বল পেয়ে যান সেই কেকো-ই। সেটি ঠেলে দেন গঞ্জালো ক্যাস্ত্রোর দিকে, ফের সমতা! জালে জড়ানোর আগে বল অবশ্য কিকো ক্যাসিয়ার শরীরে লেগে দিক পাল্টে বিপদসীমায় জড়িয়ে যায়।
পয়েন্ট হারানোর শঙ্কার মাঝে এরপর আসে রোনালদোর সেই খলনায়ক হতে হতে নায়ক বনে যাওয়ার মাহেন্দ্রক্ষণ! ম্যাচের ৭৬ মিনিটে লুকা মডরিচ নিজেদের বক্সে বাজেভাবে ফাউলের শিকার হলে বাঁশি বাজিয়ে দেন রেফারি।
রোনালদোর স্পটকিক, বাজপাখির উড়ালে সেটি ঠেকিয়ে দেন অতিথি গোলরক্ষক হিমেনেজ, তবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফেরত আসতে থাকা বলের দিকে ক্ষিপ্রগতিতে ছুটে যেয়ে দ্বিতীয় চেষ্টায় সেটি জালে ঠেলে দেন সিআর সেভেন। গোল। খলনায়ক হতে হতে জয়সূচক গোলের নায়ক! চলতি লিগে পর্তুগিজ তারকার দ্বিতীয়! আর রিয়ালের আরেকবার পূর্ণ তিন পয়েন্ট।
অবশ্য ৮৬ মিনিটে আরেকটি গোল পেতে পারতেন রোনালদো। লুকাস ভাসকেজের পাসে বল পেয়ে জালে জড়িয়েছিলেন সিআর সেভেন, রেফারি সেটি বাতিল করে দেন অফসাইডের তকমা দিয়ে। টিভি রিপ্লে যদিও রোনালদো ও ভাসকেজের অফসাইডে না থাকার কথাই ফিসফিস করে জানিয়ে গেছে!