বিচিত্র সব কাণ্ডকীর্তির খবর পাওয়া যায় বিভিন্ন রেকর্ড গড়া নিয়ে। এমনই এক রেকর্ড গড়ার ভূত চেপেছিলো দাতব্য প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ওয়ের ঘাড়ে। তহবিল যোগাতে সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের ক্লিভল্যান্ড শহরের আকাশ ছেয়ে দিয়েছিলো লাখ লাখ রঙিন বেলুনে। তবে খুব সামান্য সময়ের জন্যই সেগুলো আকাশে ছিলো। বিরূপ আবহাওয়ায় বেলুনগুলো নিচে নেমে আসে। উদ্দেশ্য মহৎ হলেও লাখো বেলুনের নানামুখী বিড়ম্বনা শেষমেষ লজ্জায় ডুবিয়েছিলো সংস্থাটিকে।
১৯৮৬ সালের সেই পরিণাম না ভাবা প্রচারণায় শহর এবং পার্শ্ববর্তী লেকে লাখো বেলুন ছড়িয়ে পড়ে। অচল হয়ে যায় রাস্তা, রানওয়েতে জমা বেলুনে বন্ধ হয়ে যায় বিমান উড্ডয়ন। এই নিছক বিলাসী প্রচারণায় দুই জেলে প্রাণ হারায় বলেও অভিযোগ ওঠে।
দিনটি ছিলো ২৭ সেপ্টেম্বর। আড়াই হাজার স্বেচ্ছাসেবক হিলিয়াম গ্যাস ভরে প্রস্তুত করে পনেরো লাখ বেলুন। বেলা ১ টা ৫০ মিনিটে সবগুলো বেলুনকে উড়ানো হয়।
চমৎকার রঙিন বেলুনগুলো শুরুতে উপড়ে উঠতে থাকে, তবে আবহাওয়ার মনে ছিলো ভিন্ন কিছু। ঠাণ্ডা বাতাসে বেলুনগুলো নিচে নেমে আসতে শুরু করে।
বেলুনে বন্ধ হয়ে যায় ক্লিভল্যান্ডের সড়ক। ব্রুক লেকফোর্ট এয়ারপোর্টে বেলুন বিভ্রাটে বাতিল হয় বেশ কয়েকটি ফ্লাইট। লেক এরি’র পানিতে ভাসতে থাকে বেলুন আর বেলুন। ওই লেকেই মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া দুই জেলেকে উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছিলো মার্কিন কোস্টগার্ড হেলিকপ্টার। বেলুনে ভরা লেকে সহজ কাজটিও অসাধ্য হয়ে ওঠে। পরে ওই দুই হতভাগ্যের লাশ উদ্ধার করা হয়। স্বামীর মৃত্যুর জন্য ইউনাইটেড ওয়ে-কে দায়ী করে মামলা ঠুকে দেন এক জেলের স্ত্রী।
২৭ সেপ্টেম্বরের পর এক সপ্তাহ পরেও বেলুন বিপর্যয়ের কারণে ভুগতে হয় ক্লিভল্যান্ডকে।