টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রুপাকে গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।
বুধবার টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি একেএম নাছিমুল আখতার।
আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে তিনি বলেন, এই মামলাটি অত্যান্ত র্স্পশকাতর। আসামীদের বিরুদ্ধে যেসব সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করা হয়েছে, তাতে তাদের নৃশংস অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। এই জঘন্য অপরাধের শাস্তি হিসেবে আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আবেদন করছি।
রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে বিচারক আবুল মনসুর মিয়া আসামীদের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুরু করার আদেশ দেন। তাদের পক্ষে আংশিক যুক্তিতর্কের পর রোববার পর্যন্ত অাদালত মুলতবি করেন।
এদিন আদালত প্রাঙ্গনে রুপা হত্যার আসামীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে মানবাধিকার আইনজীবী পরিষদ।সেখানে বক্তব্য রাখেন, মানবাধিকার আইনজীবী পরিষদ সভাপতি এডভোকেট এস আকবর খান, মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সাধরণ সম্পাদক এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ, এডভোকেট গোলাম মোস্তফা, ওয়াজেদ আলী ও নিহত রুপার ভাই হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ আসার পথে রুপাকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয়।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় মহিলা হিসেবে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রুপার মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করে।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে রুপার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবি দেখে তাকে সনাক্ত করেন।
২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তারা প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। মামলার আসামী এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে।
গত ৩ জানুয়ারী বাদীর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরবর্তীতে এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, চিকিৎসক, ১৬৪ ধারার জবানবন্দি গ্রহণকারী ৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সুরতহাল রিপোর্ট ও জব্দ তালিকা সর্বমোট ২৭ জন স্বাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।