শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী দিয়া-রাজীবের মৃত্যুর ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের চালকসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নিহত রাজীবের পরিবার।
রোববার বিকেলে রায় ঘোষণার পরর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাজীবের খালাত ভাই মেহেরাজ উদ্দিন মোবাইল ফোনে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘আজ রায় হবে তা গতকাল পত্রিকায় দেখেছি। আজ রায়ের কথা শুনেছি সাংবাদিকদের মাধ্যমে। রাজীবের মা অসুস্থ থাকায় আমরা আদালতে যেতে পারিনি। তিনি এখন দক্ষিণখান এলাকায় আমার বাসায় রয়েছেন। রায় হবে শুনে আজ সকাল থেকেই তার মা কাঁদছিলেন। এই রায়ে তিনি সন্তুষ্ট হয়েছেন।’
‘‘আমরা বরাবরই বলে আসছিলাম, ঘাতকদের যাতে শাস্তি হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যখন গিয়েছিলাম আমরা তখনও বলে এসেছি, এই মামলায় আসামিদের যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়।’’
তবে আরেক শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিমের বাবা ও মামলার বাদি জাহাঙ্গির আলম রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ ওই মামলার রায় দেন। রায়ে জাবালে নূর পরিবহনের দুই গাড়ির দুইজন চালকসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। পাশাপাশি তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। জরিমানা দিতে ব্যর্থ হলে তাদেরকে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে জানান আদালত।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং তাদের সহকারী কাজী আসাদ। আসাদ পলাতক রয়েছেন।
রায় দিতে গিয়ে বিচারক ইমরুল কায়েশ বলেন, ‘এই মামলাটি দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় হয়েছে যার সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এর চেয়ে বেশি শাস্তি দেয়ার সুযোগ নেই। আপনারা (সাংবাদিক) সংবাদগুলো এমনভাবে প্রচার করবেন যাতে ছাত্রসমাজ ও জনগণের মধ্যে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি না থাকে।’
২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেষারেষিতে প্রাণ হারায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। আহত হয় আরও ১০-১৫ শিক্ষার্থী।
ওই দিনই নিহত মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।
২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। ২৫শে অক্টোবর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন।