রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদককে গলায় ছুরিকাঘাত করেছে বহিরাগত এক যুবক। রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন একজনকে আটক করে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রলীগ। পূর্ব শত্রুতার জেরে হামলার ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
হামলার শিকার ছাত্রলীগ নেতা ইমতিয়াজ আহমেদকে রামেক হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। আটক যুবকের নাম আরিফ ইশতিয়াক রোমেল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলা এলাকার অধিবাসী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে ইমতিয়াজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানোয়ার হোসেন সারোয়ার বঙ্গবন্ধু হলের পাশে দোকানে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় পাঁচ-সাতটি মোটরসাইকেল নিয়ে বহিরাগত কয়েকজন যুবক ওই দোকানের সামনে আসে।
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে একজন দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা ইমতিয়াজের গলায় আচমকা ছুরিকাঘাত করে দৌঁড় দেয়। পালানোর সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বহিরাগত যুবক আরিফকে আটক করে বঙ্গবন্ধু হলের অতিথি কক্ষে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য, হল প্রাধ্যক্ষ ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এলেও বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের সামনেই আরিফকে বেধড়ক মারধর করে।
পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তেজিত হয়ে ওঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজেই ঘটনাস্থলে এসে আরিফকে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন।
পুলিশি নিরাপত্তায় তাকে হল থেকে বের করার মুহূর্তে আবারও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী আরিফের ওপর চড়াও হন এবং তাকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন। আরিফকে বাঁচাতে গিয়ে সহকারী প্রক্টর শিবলী ইসলাম, আবু সাঈদ মো. নাজমুল হায়দার, মতিহার জোনের ডিসি সাজিদ হোসেন ও মতিহার থানার ওসি (তদন্ত) মাহবুব আলম শরীরে আঘাত পান।
পরে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আরিফকে চিকিৎসার জন্য তৎক্ষণাৎ রামেক হাসপাতালে নেয়া হয়।
এ বিষয়ে রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, বহিরাগত যুবক আরিফকে আটক করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশে খবর দেয়। এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর করে। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আরিফকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। পুলিশ তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
মতিহার থানার ওসি মাহবুব আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি পুলিশ নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। আরিফকে হাসপাতালে নেয়ার পথে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আরিফকে মারধর করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আমিসহ কয়েকজন শিক্ষক আঘাত পেয়েছি। আরিফকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুস্থ হওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত জানার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
জানা যায়, এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা এলাকার বাধন নামের এক যুবককে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়। তবে সেই নেতার পরিচয় জানা যায়নি। এর কিছুক্ষণ পরই ইমতিয়াজকে ছুরিকাঘাতের এ ঘটনা ঘটে।