রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ৩ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করেছেন উচ্চ আদালত। আদালতের নিষেধ থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম আব্দুস সোবহান ও সিন্ডিকেটকে ভৎসনা করা হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিটের শুনানিতে বুধবার বিচারপতি আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে উচ্চ আদালত এ আদেশ দেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ফুয়াদ হাসান।
এ বিষয়ে চ্যানেল আই অনলাইকে জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘বিভাগটিতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৬ সালে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানে বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি আবেদনের জন্য বিভিন্ন যোগ্যতা নির্ধারণ করেছিলেন। তবে তখন নিয়োগ হয়নি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটিকে না জানিয়েই প্রশাসন বিজ্ঞপ্তিতে কিছুটা পরিবর্তন করেছিল। তাই আদালত এই বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ পাওয়া তিন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল ঘোষণা করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০১৬ সালে যেই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল, আদালত সেই বিজ্ঞপ্তিতে যারা আবেদন করেছিলেন আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তাদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’
অন্যদিকে, শুনানি চলাকালীন আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষের আইনজীবীকে বলেছিলেন এ বিষয়ে রায় ঘোষণার পূর্বে প্রশাসন যেন কোনো কিছু প্রসিড না করে। তা সত্ত্বেও গত রোববার (২৬ জানুয়ারি) সকালে উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষক নিয়োগের ভাইবা বোর্ড শুরু হয়।
ওই দিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯৭তম সিন্ডিকেট সভায় তাদের নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। সভায় তিন সদস্য তাদের নিয়োগে বিরোধিতাও করেন। এছাড়াও ভাইবা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক এই নিয়োগকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে তা বন্ধের দাবি জানান। নিয়োগপ্রাপ্ত ওই তিন শিক্ষকের নাম শামসুন্নাহার, মুখতার হোসেন ও রেজভী আহমেদ ভুঁইয়া।
তবে এ বিষয়ে জানতে বিভাগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কথা বলা যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর তিনটি পদের বিপরীতে বিভিন্ন যোগ্যতা নির্ধারণ করে বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ওই সময় ৩৮টি আবেদন জমা পড়ে। তবে ওই বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ হয়নি। পরবর্তীতে গত বছরের ৩০ জুলাই নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের প্রশাসন। বিভাগের প্ল্যানিং কমিটিকে না জানিয়েই প্রভাষক পদে আবেদনের জন্য এগ্রিকালচারাল কেমেস্ট্রি নামে নতুন একটি বিষয় সেই বিজ্ঞপ্তিতে যুক্ত করা হয়।
এর পরপরই হাইকোর্টে রিট করেন বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলী আসগর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২১ আগস্ট নতুন বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক নিয়োগ কেন অবৈধ হবে না তা জানতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি শুনানি শেষ হয়।