রাবি প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনে হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ধর্মঘট চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার চলমান আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা এ হামলা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় জেরে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘটের ডাক দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, প্রগতিশীল ছাত্রজোট পূর্বঘোষিত ধর্মঘট পালনের সকাল ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো এসময় বিভিন্ন রুটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলে তারা বাসগুলো আটকে দেন। ফলে সকালের প্রথম ট্রিপের নির্ধারিত বাসগুলো ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারেনি। বাসগুলো ছাড়তে চাইলে তারা বাসের সামনে শুয়ে পড়েন।
এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন ও ফিরোজ মাহমুদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন সাবেক নেতা সেখানে যায়। তারা ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশ প্রশাসন উভয়পক্ষকে শান্ত করেন। তারপর সকাল ১০টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে ও নিপীড়নবিরোধী আন্দোলনে হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচিতে ‘প্রশাসনের মদদে’ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও কর্মকর্তাদের হামলার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
মারধরের শিকার কেন্দ্রীয় ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলার প্রতিবাদ ও জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আমরা বাস বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। হঠাৎ সেখানে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নয় এমন কয়েকজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আমাদের ওপর চড়াও হয়।’
তবে মারধরের কথা অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমরা কয়েকজন প্রশাসন ভবনের সামনে দিয়ে প্রধান ফটকের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন প্রক্টর স্যারের সঙ্গে কয়েকজনের বাকবিতণ্ডা করছিল তা দেখে আমরা এগিয়ে যাই। তারা প্রক্টরের সঙ্গে খুব বাজে ব্যবহার করছিল। আমরা বিষয়টির প্রতিবাদ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল স্বাভাবিক করে দিয়েছি। তাদের ওপর কোনো হামলা বা মারধর করেনি। ’
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘তারা জোর করে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহনের বাস বন্ধ করে রেখেছিল। এতে শিক্ষার্থীদের চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছিল। ছাত্রজোটের নেতাকর্মীদের সহিংস কর্মসূচি না করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানাই। তবে তারা নির্দেশনা না মেনে বাস বন্ধ রাখার চেষ্টা চালায়। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।’