বাংলাদেশ দাবায় পিছিয়ে থাকার জন্য সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই দায়ী করেছেন রানী হামিদ। নতুনদের মধ্যে ইচ্ছে থাকলেও সহযোগিতার অভাবে তারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছেন না বলে মনে করেন সবচেয়ে বেশি জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত এই দাবাড়ু।
বাংলাদেশে দাবা চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ ডক্টর কাজী মোতাহার হোসেন। তবে ’৭৪ পরবর্তী সময়ে ক্রীড়া নিয়ন্ত্রক বোর্ড আর ক’জন উদ্যোক্তার আয়োজনে স্বাধীন বাংলায় প্রথমবারের মতো হয় জাতীয় দাবা।
এরপর থেকে দাবাকে এগিয়ে নিতে যিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কাজ করেছেন যিনি, তিনি রানী হামিদ। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত টানা ৬ বারসহ জাতীয় পর্যায়ে ১৮টি চ্যাম্পিয়নশিপের মালিক এ আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ড মাস্টার। জিতেছেন ৩টি ব্রিটিশ চ্যাম্পিয়নশিপ। ২০১৫ তে অর্জনে যোগ হয় কমনওয়েলথের স্বর্ণপদক। কিন্তু দাবার দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার জন্য তিনি সাংগঠনিক অদক্ষতাকেই দায়ী করেছেন।
‘এখন যেমন তারা যে কোনো প্রোগ্রাম করতে গেলেই বলেন স্পন্সর নেই, পয়সা নেই। এই স্পন্সর ও তহবিল যোগাড় করতে যে ধরণের সংগঠকের দরকার তার অভাব রয়েছে,’ বলেন রানী হামিদ। এ কারণেই দাবায় আমাদের দেশ উন্নতি করতে পারছে না বলে মনে করেন তিনি।
দেশে ভাল দাবাড়ু আছেন বলে মনে করেন রানী হামিদ। তিনি বলেন, নতুন অনেক মেয়েই উঠে আসছেন এই ক্ষেত্রে। তিনি নিজেও মহিলা দাবা সমিতি নামে একটি সংগঠন চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তার সঙ্গে আছেন জাতীয় প্লেয়ার জাহানারা হক উনু।
দেশের প্রথম নারী আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ড মাস্টার এ দাবাড়ু। রাষ্ট্রের কাছে কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না বলে কিছুটা ক্ষোভও আছে তার। তিনি বলেন, ‘খেলার জগৎটাকে আমি ব্যবহার করতে পারছি না। কোনো একটা টুর্নামেন্ট হলে যে আমি যাবো, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত দাবাড়ু হিসেবে যে কিছু অগ্রাধিকার পাবো, সেটা তো আমি পাচ্ছি না। এসব কে দেখবে? দেখার লোক কোথায়?’
দাবার বিশ্বকাপখ্যাত ‘দাবা অলিম্পিয়াডে’ দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছেন অসংখ্যবার। মেয়েদের পিছিয়ে না রেখে তাদের জন্য আলাদা আর্থিক যোগান চান এ বরেণ্য দাবাড়ু।