বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া রাজাকারদের সন্তানদের নিয়ে বুধবার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। আবার একই দিনে একই বিষয়েই একই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
‘বাংলাদেশ: বিধি বহির্ভূত ও গোপন গ্রেফতার বন্ধ করুন’ – শিরোনামে প্রকাশিত বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত বিরোধী দলীয় নেতাদের তিন সন্তানকে এ বছরের আগস্ট থেকে অবৈধভাবে আটকে রেখেও বারবার অস্বীকার করছে। সরকারের উচিৎ এই তিন সন্তানকে এই মুহূর্তে ছেড়ে দেয়া।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেম এবং গোলাম আযমের ছেলে আমান আযমীকে কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা বা অভিযোগ ছাড়াই জোরপূর্বক ধরে নিয়ে গুম করে রাখা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে বিবৃতিতে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নামে এ ধরণের ক্ষমতার অপব্যবহার ঠেকাতে বাংলাদেশের দাতাগোষ্ঠী ও সন্ত্রাসবিরোধী অংশীদারদের জোরগলায় প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
অন্যদিকে বিবিসি ‘বাংলাদেশের ‘গুম হওয়াদের’ নিয়ে ভয়’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে সরাসরিই শুরু করা হয় সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমীকে নিয়ে। বলা হয়, গত ২২ আগস্ট তার বাসায় প্রায় ৩০ জন মানুষ এসে হাজির হন।
তারা সবাই সাদা পোশাকে এলেও কারও কারও কাছে অস্ত্র ছিল বলে বাড়ির কেয়ারটেকারের বরাতে জানিয়েছে বিবিসি। সেখানে জানানো হয়, ওই ব্যক্তিদের কাছে কোনো বৈধ কাগজপত্র না থাকলেও তারা কেয়ারটেকারের কাছে সিসিটিভি ফুটেজের কন্ট্রোল রুম কোথায় জেনে ফুটেজের ডিস্ক নিয়ে নেয়। এছাড়াও আমান আযমীর অবস্থান জানাতে না পারায় কেয়ারটেকার আজাদকে মারধোরও করা হয় বলে বিবিসি জানিয়েছে।
বাকি দু’জনের কথাও উল্লেখ করে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসের প্রথম দিকে তারা অপহৃত হন।
বিবিসি প্রতিবেদনে বলেছে, জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংক্রান্ত সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল অনেক বছর ধরেই বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে বলে সতর্ক করে আসছে।
কিন্তু এ বছর এর পরিমাণ আশঙ্কাজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। আর উদাহরণ হিসেবে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, মীর আহমেদ বিন কাসেম এবং আমান আযমীর কথা বলা হয়েছে।