রাজধানীর সূত্রাপুর এলাকায় সংখ্যালঘু একটি পরিবারের বসত-বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ভুক্তভোগী পরিবারটির কর্তা তপন দাসের অভিযোগ, ১৯৭১ সালে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তার পৈতৃক জমির দলিল লিখে নেয়া একটি মহলের ইন্ধনে তৃতীয় কোনো পক্ষ এই হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তপন দাস জানান, সূত্রাপুরের সুখলাল লেন এলাকায় প্রায় সাড়ে ৭ কাঠা জমি নিয়ে আইনি লড়াই চলছিলো। উচ্ছেদের বিরুদ্ধে কোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরও পৈতৃক বসত-ভিটা দখলের চেষ্টায় প্রায় এক-দেড়’শ জন তার বাড়িতে ভাঙচুর-লুটপাট চালায়।
তিনি আরও জানান, সকাল সাড়ে নয়টার দিকে তার বাড়িতে হামলা চালায় এক-দেড়’শ জন। উচ্ছেদ করে বাড়ি দখল করতে এলেও তাদের সঙ্গে কোনো ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ ছিলো না। বাইরের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে দুর্বৃত্তরা তার স্ত্রী-সন্তানকে বের করে দেয়। এরপর তারা শাবল, হাতুরি দিয়ে দরজা-জানালা ভাঙা শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে উচ্ছেদকারীদের তাণ্ডব বন্ধ হয়।
জমি নিয়ে বিরোধের বিষয়টি জানিয়ে তপন দাস আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে এলাকার তৎকালীন প্রভাবশালী ব্যক্তি ইমদাদুল হক রাজাকারদের হাতে তুলে দেবে এমন ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর করে একটি দলিল লিখিয়ে নেয়। পরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জমিটি ফিরে পেতে আদালতের কাছে আবেদন জানান তারা। তবে আদালতের রায় দখলদারদের পক্ষে গেলেও তারাও কিছুটা অংশ পান। এই অংশ পেতে আবার বন্টন মামলা চলছিলো। এ অবস্থায় দখলী জমি তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়। তৃতীয় পক্ষ উচ্ছেদ মামলা করে। এই মামলায় উচ্ছেদের বিরুদ্ধে গত ২৫ জানুয়ারি স্থগিতাদেশ জারি করেন আদালত এবং ১৬ তারিখ শুনানির দিন ধার্য করেন।’
আদালতের এই আদেশ থাকার পরও প্রভাবশালীদের প্রশ্রয়ে জমির ক্রেতা বলে দাবি করা তৃতীয় একটি পক্ষ এই হামলা-ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ করেন তপন।
তবে পুলিশ বলছে সময় মতো কোর্টের স্থগিতাদেশ দেখাতে পারলে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটতো না।
সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তপন চন্দ্র সাহা চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান,‘তপন দাস উচ্ছেদের বিরুদ্ধে জারি করা কোর্টের স্থগিতাদেশের কপি আজকে এনেছেন। কপি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ উচ্ছেদকারীদেরকে বাধা দিয়েছে এবং কোর্টের আদেশ না পাওয়া পর্যন্ত কোনো তৎপরতা থেকে বিরত থাকতে বলেছে।’