রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ৪০৯টি স্থানে ঈদ জামাতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জাতীয় ঈদগাহের প্রধান জামাতসহ ঈদুল আজহার ২৩০টি এবং উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ১৭৯টি জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান ঈদ জামাত সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে এবারও ৫টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত হবে সকাল ৭টায়। এর পর পর আরো ৪টি জামাত হবে যথাক্রমে ৮টা, ৯টা, ১০টা ও পৌনে ১১টায়। প্রথম জামাতে ইমামতি করবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী, দ্বিতীয় জামাতে তেজগাঁও রেলওয়ে জামে মসজিদের ইমাম ড. মাওলানা মুসতাক আহমাদ, তৃতীয় জামাতে মহাখালী হোছাইনিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম আল মারুক, চতুর্থ জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মাওলানা আব্দুর রব মিয়া ইমামতি করবেন।
রাজধানীতে সর্বশেষ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে চ্যানেল আই মসজিদ প্রাঙ্গণে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে। এছাড়া সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদুল ফিতরের জামাতের আয়োজন করা হয়েছে। এখানে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবর্গ, জাতীয় সংসদের হুইপবৃন্দ, সংসদ সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিগণ জামাতে অংশ নেবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিআয় ঈদের দু’টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টায় এবং দ্বিতীয় জামাত হবে সকাল ৯টায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল মেইন গেইট সংলগ্ন মাঠে সাড়ে ৭টায় ও ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ হল লনে সকাল ৮টায় পৃথক দু’টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
রাজধানীর আরামবাগে দেওয়ানবাগ শরীফে ঈদের ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমটি সকাল ৮টা, দ্বিতীয়টি সকাল সাড়ে ৯টা এবং শেষ জামাত সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতি বছরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সেখানেও ঈদ জামাতের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বিশেষ ট্রেন ও বাস চলাচল করবে।
ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদের নামাজ আদায়ের পর কোলাকুলি করে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। ঘুচে যাবে সব ভেদাভেদ। নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই যাবেন কবরস্থানে। চিরবিদায় নেওয়া স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সজল চোখে এই আনন্দের দিনে তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাবেন। এরপর বাড়ি ফিরে আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে ঈদের প্রধান কর্তব্য সম্পন্ন হবে।
ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নির্ধারিত স্থানগুলোতে পশু কোরবানির জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সাথে উভয় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোরবানীর পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দুই সিটি করপোরেশনের প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
পবিত্র এই দিনটিতে উৎসবের আমেজ দিতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়ক দ্বীপসমূহে জাতীয় এবং ঈদ মোবারক খচিত পতাকা দিয়ে সুশোভিত করা হচ্ছে। পাশাপাশি সকল সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা ও ঈদ মোবারক খচিত পতাকা উত্তোলন করা হবে। এ ছাড়াও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ভবনগুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে।