চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের সফর বাতিল করেছে মিয়ানমার

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের একটি নির্ধারিত সফর মিয়ানমার সরকার হঠাৎ করেই বাতিল করে দিয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। ইয়াঙ্গুনে জাতিসংঘ মুখপাত্র স্তানিস্লাভ সেলিঙ বিবিসিকে জানান, সরকার এই সফর বাতিল করার পেছনে কোন কারণ দেখায়নি।

রোহিঙ্গা মুসলমানরা কেন পালাতে বাধ্য হয়েছে সেটা রাখাইনে গিয়ে তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘ মিয়ানমারের ওপর চাপ দিয়ে আসছিল।

মাসখানেক আগে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করার পর থেকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান, বৌদ্ধ এবং হিন্দু ঘরবাড়ি ছেড়ে রাখাইন রাজ্যে ভেতরেই সাময়িক আশ্রয়ে রয়েছে। প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে।

মিয়ানমারে কর্মরত একটি ত্রাণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির প্রধান এবং সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মিলিব্যান্ড বলেছেন, যে সব দেশ বর্মী সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেয় তাদের উচিত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের জন্য তাদের প্রভাবকে কাজে লাগানো। এ সমর্থনকে মানবাধিকার লংঘনের কাজে ব্যবহার করা চলে না।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য ‘বিশাল পরিমাণে’ আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। শরণার্থী বিষয়ক জাতিসংঘের হাইকমিশনার ফিলিপো গ্রান্ডি কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে বলেছেন, এ এক বিরাট চ্যালেঞ্জ।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ আগস্ট।

৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।

সেনাবাহিনীর হামলা ও সহিংসতার মাত্রার ভয়াবহতার কারণে জাতিসংঘ একে ‘পাঠ্যবইয়ে যোগ করার মতো জাতিগত নিধনের উদাহরণ’ বলে অভিহিত করেছে।আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।