রমজান শুরুর প্রথম দিনেই বেগুন, কাঁচামরিচ ও ধনে পাতাসহ বিভিন্ন সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। কাঁচা বাজারের সবজির দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। রমজানে যেসব সবজি বেশি ব্যবহার হয় সেগুলো প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ১০ থেকে ২০ টাকা। দাম বৃদ্ধিতে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বেগুন।
প্রত্যেক বাজারে সিটি করর্পোশনের নির্ধারিত পণ্যের মূল্যের তালিকা বোর্ডে লেখা থাকলেও বিক্রেতারা তা না মেনে নিজেদের মতো দাম নির্ধারণ করে পণ্য বিক্রি করছে।
শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার ঘুরে দেখা গেছে সবজিসহ নিত্যপণ্যের বাড়তি দামের মেলা। দেশি পেয়াজের দাম প্রতি কেজি ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে যা আগে ছিলো ৩৮ টাকা। ইন্ডিয়ান পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪৩ টাকা দরে। রমজানে আলুর চাহিদা ব্যপক হারে বেড়ে যায়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতি কেজি আলুর দাম এখন ২৪ টাকা।
সবজিতে চাহিদা থাকায় বিক্রেতারা আগুনের মতো দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। টমেটো প্রতি কেজি ১০০ টাকা। শশা ১০০ টাকা কেজি কিন্তু রোজার আগেও শশার দাম ছিলো ৫০ টাকা কেজি। হাইব্রিগেড শশার দাম নির্ধারন হয়েছে ৫০ টাকা কেজি। ঝাঁঝ নিয়ে কাঁচা মরিচ ও শক্ত অবস্থানে রয়েছে। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৮০ টাকা কেজি। যার আগের দাম ৫০ টাকা। সবুজ ধনে পাতা প্রতি কেজি ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পুদিনা পাতা যেখানে রোজার আগে দাম ছিলো ২০০ টাকা কেজি সেখানে এখন তা ৪০০ টাকা কেজি। লেবু প্রতি হালি ৩০ টাকা। আর আগুনের মতো বেগুনের দাম ১০০ টাকা কেজি। কিন্তু রোজার আগেও এই বেগুনের দাম ছিলো ৪০ টাকা কেজি।
রমজানে বেগুনের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়ে যায় বলে জানিয়েছেন দোকানিরা।
রমজানে প্রথম দিনে বাজার করতে আসা গৃহিনী আসমা বেগম বলেন, রমজানে যে সবজিগুলো ছাড়া চলে না সেই সবজিগুলোর দাম বেছে বেছে বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা যা আয় করি তা যদি বাজারে এসে সব দিয়ে দেই, তাহলে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো চলবে কী করে?
মাংসের দোকান থেকে প্রায় রেগে বেরিয়ে এসে চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, গরুর মাংস কিনতে এসে দেখি একসপ্তাহের মাথায় দাম বেড়ে গেছে। আমাদের তো বেতন বাড়েনি তাহলে পণ্যের দাম কেনো বাড়ছে? এভাবে যদি সব ধরণের জিনিসের দাম বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের সাধারণ মানুষদের না খেয়ে মরতে হবে।
বাজারে প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা। কিছুদিন আগে যা ছিলো ৪৫০ টাকা। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকা । যা রমজানের কয়েকদিন আগেও ছিলো ৩৬৫ থেকে ৩৭০ টাকার মধ্যে।
তবে বিক্রেতেরা বলছে উল্টো কথা। তারা বলছে, চাহিদার চেয়ে বাজারে সবজি আমদানি কম থাকায় একটু বেড়েছে। আর রমজানে দাম সবসময় একটু বাড়তিই থাকে।
তবে ফলের বাজারে দাম স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে। প্রত্যেকটি ফলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ইফতারের গুরুত্বপূর্ণ আইটেম খেজুরের দাম এবার বাড়েনি। যা গতবারেও অনেক বেশি ছিলো।
সরকারি বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিংয়ের কথা বলা হলেও তা না থাকায় বিপাকে ক্রেতারা। ক্রেতাদের আশা বাজারে মনিটরিং বাড়ানো হলে মধ্যবিত্তরা একটু হাফ ছেড়ে বাঁচবে।