যৌন নির্যাতনের অভিযোগে চরম অস্থিরতার মুখে থাকা চলতি বছর বিজয়ী ঘোষণা করবে না বলে জানিয়েছে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার নির্ধারণকারী সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
সংস্থাটির এক সদস্যের স্বামীর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনে অভিযোগ এবং ওই ইস্যুতে সংস্থার অবস্থান নিয়ে বেশ কিছু সময় ধরে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সদস্যের সঙ্গে অ্যাকাডেমির প্রধান এবং আরও চার সদস্যও পদত্যাগ করেছেন।
কিন্তু তারপরও পরিস্থিতির জটিলতা কাটেনি। তাই এ বছর সাহিত্যে নোবেল ঘোষণা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
বিবিসি জানায়, যৌন কেলেঙ্কারির কারণে সুইডিশ অ্যাকাডেমির ওপর বর্তমানে জনগণের আস্থা কমে গেছে এই আশঙ্কায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর বদলে আগামী বছর এক সঙ্গে ২০১৮ ও ২০১৯ সালের বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
গত বছর নভেম্বরে ফরাসি আলোকচিত্রী জ্য-ক্লঁদ আরনল্টের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন ১৮ নারী। তিনি একটি কালচারাল প্রজেক্ট চালাতেন সুইডিশ অ্যাকাডেমির অর্থায়নে।
নির্যাতনের বেশ কিছু ঘটনা অ্যাকাডেমির মালিকানাধীন কিছু ভবনে ঘটেছিল বলেও অভিযোগ ওঠে।
আরনল্ট অবশ্য এর সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন।
এ ঘটনায় অ্যাকাডেমির সদস্য লেখক-কবি ও আরনল্টের স্ত্রী কাতারিনা ফ্রস্টেনসানের কমিটি থেকে সরানোর দাবি ওঠে। ওই সময় সংস্থাটি কাতারিনাকে কমিটি থেকে অপসারণের বিরুদ্ধে ভোট দিলে এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
সমালোচনার ধারাবাহিকতায় সদস্যদের মাঝে স্বার্থের দ্বন্দ্ব, এমনকি নোবেল বিজয়ীদের নাম ফাঁস হওয়ার অভিযোগ উঠলে বিভেদ দেখা দেয় খোদ সুইডিশ অ্যাকাডেমির মাঝেই। যার ফলে এক পর্যায়ে পদত্যাগে বাধ্য হন কাতারিনা ফ্রস্টেনসান ও অ্যাকাডেমি প্রধান প্রফেসর সারা দানিউস এবং আরও চার সদস্য।
অ্যাকাডেমির কয়েকজন সদস্য অবশ্য বলছেন, ঐতিহ্য ধরে রাখার উদ্দেশ্যে অন্তত পুরস্কার ঘোষণা করা প্রয়োজন। কিন্তু অন্যরা মনে করছেন, প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্মাননা প্রদানের মতো অবস্থায় নেই।
১৯০১ সালে প্রথম বিজয়ী ঘোষণার পর থেকে আজ পর্যন্ত এত বড় কেলেঙ্কারির মুখে পড়েনি বিশ্বখ্যাত এই পুরস্কার।