যারা আগামী দিনের উদ্যোক্তা হতে চান, নতুন কিছু করতে চান, এগিয়ে যেতে চান সৃজনশীল কাজ দিয়ে বা অর্জিত সম্পদ দিয়ে মানব কল্যাণে কিছু করতে চান; তাদের জন্য একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব রিচার্ড ব্রানসন। তিনি বিশ্বখ্যাত ভার্জিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। শুধু ভার্জিন নয়, এমন আরও প্রায় ৪০০ কোম্পানির প্রতিষ্ঠা তিনি।
কিন্তু তার উঠে আসার গল্পটা একদম মসৃণ ছিলো না। অনেক চড়াই উৎরাই পার করে আজকের অবস্থানে ব্রানসন।
স্যার রিচার্ড চার্লস নিকোলাস ব্রানসন একেবারে শূন্য থেকে শুরু করা একজন ব্রিটিশ উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী। ১৯৭২ সালে খুবই ক্ষুদ্র গ্রামোফোন রেকর্ডের দোকান দিয়ে তার আনুষ্ঠানিক ব্যবসার হাতে খড়ি। সেখান থেকে তিনি এখন ভার্জিন গ্রুপের মতো বিশাল এক সাম্রাজ্যের অধিপতি।
কি নেই তার ব্যবসায়! কোমল পানীয় থেকে শুরু করে আকাশে ডানা মেলা উড়োজাহাজ; সবই আছে তার ব্যবসার মধ্যে।
নিজে খুবই খেয়ালী ধরণের একজন মানুষ, খুব রোমাঞ্চপ্রিয়ও। পাল তোলা নৌকা করে যেমন আটলাটিক সাগর পাড়ি দিয়েছেন তেমনি গ্যাস বেলুনে করে ভ্রমণ করেছেন পৃথিবীর একপ্রান্ত।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানকে তিনি বলেছেন, ‘আমি প্রতিটা ক্ষণ উপভোগ করি। এটাই আমার স্বভাব। আমাকে আজকেই এটা করতে হবে এমন কোনো কিছু আমি করি না বা আমার মধ্যে এমন অনুভূতিও আসেনি কখনও।’
এ সময়ে যাদেরকে উদ্যোক্তা আইকন ভাবা হয় সেই বিল গেটস, স্টিভ জবস বা মার্ক জাকারবার্গের মতো ব্রানসনও ড্রপ আউট। তিনি স্কুলের গণ্ডিই পেরোতে পারেননি।
স্কুলের হেডমাস্টারের মেয়ের সাথে প্রেম করার কারণে তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তারপর তিনি একটা ‘সুইসাইডা নোট’ লিখেছিলেন। যখন সেটা পাওয়া গেলো ততোদিনে তিনি বিষয়টা বেমালুম ভুলে গেছেন।
স্কুল ছাড়াতে বাধ্য হওয়ার পর তিনি ‘স্টুডেন্ট’ নামে একটা ম্যাগাজিন বের করেছিলেন।। বড় বড় বিজ্ঞাপনও নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। এ সাফল্যে তিনি লন্ডনে মিউজিক এবং ড্রাগ নিয়ে ভালোই ছিলেন।
এরপর মেইল অর্ডার কোম্পানি শুরু করলে তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ভার্জিন নামটা নিয়েছিলেন তারই এক কর্মচারির কাছ থেকে। কারণ ব্যবসার লাইনে একেবারেই নতুন ছিলেন বলে তার সেই কর্মচারি তাকে ভার্জিন নামে ব্যবসা খোলার পরামর্শ দেয়।
নিজের উত্থান-পতন জীবনের কাহিনী তিনি লিখেছেন চমৎকার মুক্ত গদ্যে। ‘লুজিং মাই ভার্জিনিটি’ তার অসামান্য আত্মজীবনী। আগ্রহীরা পড়ে নিতে পারেন। আর যারা আগামীতে উদ্যোক্তা হতে চান শিখতে পারেন তার জীবন থেকে।