চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যেভাবে অধ্যক্ষ মাহফুজা হত্যার দায় স্বীকার করা গৃহকর্মী গ্রেপ্তার

নেত্রকোনার মদন থেকে ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভিন হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি স্বপ্না ওরফে রিতা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সেসময় তার কাছ থেকে সাত হাজার টাকাসহ স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।

এর আগে স্বপ্নাকে সরবরাহ করা রুনু ওরফে রাকিবের মাকে মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ কমিশনার ( ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার।

শুক্রবার নিউমার্কেট থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, স্বপ্না ওরফে রিতা আক্তার এই মামলার এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি। তার কোনো ঠিকানা বা নাম আসল নয়। তার কাছ থেকে ভ্যানিটি ব্যাগ, স্বর্ণালংকার ও সাত হাজার টাকা উদ্ধার করেছি।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছে স্বপ্না। বৃহস্পতিবার রাতে নেত্রকোনার মদন থেকে স্বপ্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও তার মোবাইল ফোনটি উদ্ধার হয়নি। এর আগে রুনু ওরফে রাকিবের মা যে স্বপ্নাকে অধ্যক্ষ মাহফুজার বাসায় সরবরাহ করেছিল তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তিনি আরও বলেন, বাকি একজনকে ধরতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে ফরিদপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ সব জায়গায় খোঁজ নিচ্ছি।

হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডিসি মারুফ বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন, আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি। হত্যার কারণ সম্পর্কে সুনিশ্চিত না হয়ে মন্তব্য করতে চাই না।

এ বিষয়ে পুলিশের একটি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মূলত টাকার লোভেই গৃহকর্মীরা এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে। পুরো ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত।

এর আগে সোমবার মাহফুজা চৌধুরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তে শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক (ডিএমসিএইচ) মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন: মরদেহের একটি আঙুল ভাঙা ছিলো। অধ্যক্ষ মাহফুজাকে মুখ চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড একজনের পক্ষে সম্ভব হয়নি। একাধিক ব্যক্তি এই হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে মনে হয়। মৃত নারীর ঠোঁটে, মুখে, আঙুলে ধস্তাধস্তির চিহ্ন পাওয়া গেছে।

মামলার এজাহার ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, দুই গৃহকর্মীর রুমা ওরফে রেশমার গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে। এ বছরের ৪ জানুয়ারি থেকে সে নিহত মাহফুজা চৌধুরীর বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করে। অপর গৃহকর্মী স্বপ্নার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ইটনা থানাধীন রায়কুটি এলাকায়। গত ১৮ জানুয়ারি সে মাহফুজা চৌধুরীর বাসায় কাজে যোগ দেয়।

রোববার বিকেলে রাজধানীর সায়েন্সল্যাবের সুকন্যা টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ ও স্বজনদের ধারণা ছিল মাহফুজাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে ওইদিন বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে। পরদিন সোমবার নিউমার্কেট থানায় দুই গৃহকর্মীকে প্রধান আসামি করে মাহফুজার স্বামী ইসমত কাদির গামা মামলা করেন।

মাহফুজা চৌধুরীর স্বামী ইসমত কাদির গামা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান। মাহফুজা চৌধুরী ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। সুকন্যা টাওয়ারের ১৫ ও ১৬ তলায় দুটি ফ্ল্যাটে এই দম্পতির সংসার।