ইরানের রেভোল্যুশনারি গার্ড প্রধানের কঠোর বক্তব্যে ক্ষেপে গিয়ে দেশটিকে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুদ্ধ লাগলে রাষ্ট্র হিসেবে সেটাই হবে ইরানের সমাপ্তি।
গত সপ্তাহেই ইরানের সঙ্গে সংঘাতের প্রশ্নে সুর নরম করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প৷ এমনকি বর্তমান উত্তেজনার জন্য কট্টরপন্থি উপদেষ্টাদের প্রতি বিরক্তিও প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তবে রেভোল্যুশনারি গার্ড বাহিনী যখন জানালো, তারা যুদ্ধ করতে ভয় পায় না, তখন ট্রাম্প আর নীরব থাকতে পারেননি।
ইরানের এই বাহিনীর প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হোসেন সালামি বলেছেন, ইরান ও তার আধা-সামরিক এ সংগঠন যুদ্ধ চায় না। কিন্তু সে রকম পরিস্থিতি এলে তারা ভয়ও পায় না৷ মার্কিন সেনাবাহিনীর মনে মৃত্যুর ভয় থাকায় তাদের পরাজিত করা সহজ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ইরানের সংবাদ সংস্থা ফার্স’কে সালামি বলেন, ‘বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র হলো ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্টোরের ভবনের মতো, একটি আচমকা ধাক্কায়ই তা ভেঙে পড়বে।’ তার এ মন্তব্য নিয়েও আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
এমন প্ররোচনার জবাবে এক টুইটবার্তায় ট্রাম্প সোমবার লিখেছেন: ‘ইরান যদি যুদ্ধ করতে চায়, তবে রাষ্ট্র হিসেবে সেটাই হবে ইরানের আনুষ্ঠানিক পরিসমাপ্তি। আর কখনো যুক্তরাষ্ট্রকে হুমকি দিও না!’
এই কড়া বার্তার পর রোববার ট্রাম্প ফক্স নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন, যুদ্ধ না চাইলেও তিনি কিছুতেই ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র পেতে দেবেন না৷ ‘এটা কিছুতেই হতে দেয়া চলে না,’ বলেন ট্রাম্প৷
অবশ্য মার্কিন প্রশাসন ইতোমধ্যেই ইরানের রেভোল্যুশনারি গার্ড বাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে কালো তালিকাভুক্ত করেছে৷
ওয়াশিংটন ও তেহরান দু’পক্ষই প্রকাশ্যে বলছে তারা যুদ্ধ চায় না। কিন্তু তারপরও উত্তেজনা বেড়েই চলেছে৷ গত সপ্তাহে সৌদি আরবে দু’টি পেট্রোলিয়াম স্থাপনার ওপর ড্রোন হামলার পর রোববার ইরাকের রাজধানী বাগদাদের সুরক্ষিত ‘গ্রিন জোন’-এ মার্কিন দূতাবাসের কাছে এক রকেট হামলা হয়েছে৷ দু’টি ঘটনার জন্যই ইরানকে সন্দেহ করা হলেও বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়৷
তবে মার্কিন সেনা বা স্থাপনার ওপর ইরান অথবা ইরান-সমর্থিত কোনো গোষ্ঠী হামলা চালালে তার উচিত জবাব দেয়া হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সৌদি আরবও জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না দেশটি৷ তবে মঙ্গলবারের ড্রোন হামলার জন্য তেহরানকে দায়ী করেছে সৌদি সরকার৷ ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
If Iran wants to fight, that will be the official end of Iran. Never threaten the United States again!
— Donald J. Trump (@realDonaldTrump) May 19, 2019
এর আগে পারস্য উপসাগরে ৪টি জাহাজের ওপর হামলার ঘটনার পেছনেও ইরানের হাত রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
অবশ্য এসব অভিযোগের সবই অস্বীকার করেছে ইরান৷ রোববার সৌদি উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেল আল জুবেইর বলেন, যুদ্ধ এড়াতে সব রকম পদক্ষেপ নিলেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ হলে তার দেশ জোরালো জবাব দিতে প্রস্তুত।
এ বিষয় নিয়েই সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ পারস্য উপসাগরীয় ও আরব দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের ৩০ মে মক্কায় এক জরুরি বৈঠকের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বলে জানায় ডয়েচে ভেলে।