ঐক্যফ্রন্ট তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে, ক্ষমতায় গেলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখাসহ সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়সসীমা থাকবে না বলে ঘোষণা করেছে৷
ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইশতেহার প্রণয়ন করা হয় বলে জানায় ঐক্যফ্রন্ট। ইশতেহার পাঠ করেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
ইশতেহারে বলা হয়, বিজয়ী হলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা যেসব কাজ সম্পন্ন করব তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোকে এই প্রতিশ্রুতিতে আমরা স্থান দিয়েছি।
ঘোষিত ইশতেহারে রয়েছে ১৪টি ঘোষণার সারসংক্ষেপ ও ৩৫ দফার অঙ্গীকার।
১৪ দফার সারসংক্ষেপের ২ নং পয়েন্টে রয়েছে ‘নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়টি এবং শেষ পয়েন্ট রয়েছে যুদ্ধাপরাধীর বিচারের বিষয়টি৷’
১ নম্বর দফা- প্রতিহিংসা বা জিঘাংসা নয়, জাতীয় ঐক্যই লক্ষ্যে বলা হয়, সকল জাতীয় বীরদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত করে স্কুল, কলেজ, পড়ানো হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করা হবে।
৬ নম্বর দফায় -কর্মসংস্থান এবং শিক্ষার শুরুতেই বলা হয়, পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী ব্যতীত সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা থাকবে না৷এতে আরো বলা হয়, সরকারি চাকরিতে শুধুমাত্র অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা ছাড়া আর কোনো কোটা থাকবে না৷
৩ নং পয়েন্টে ক্ষমতার ভারসাম্য বিষয়ে বলা হয়, সংসদে একটি উচ্চকক্ষ সৃষ্টি করা হবে। সবার সাথে আলোচনার মাধ্যমে ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন আনা হবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে। একটানা পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকা যাবে না। সংসদে ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দলীয় সংসদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হবে।
ইশতেহার ঘোষণা শেষে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন: এই ইশতেহারে জনগণের দাবি দাওয়া, আশা আকাঙ্খাগুলো এসেছে। আমরা আশা করি এতে জনগণের আশা পূর্ণ হবে। এই ইশতেহার সাম্প্রতিককালের বৈপ্লবিক ইশতেহার।
তিনি বলেন, মানুষ দেশের মালিকানা চায়। এর মধ্যদিয়ে তা পূর্ণ হবে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর মানুষ তার অধিকার আদায় করবে। দেশে যে সকল অপশক্তি রয়েছে তাদের পরাজিত করবে৷
‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’ শিরোনামে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০১৮ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৩৫টি প্রতিশ্রুতির সারসংক্ষেপ হিসেবে ১৪টি ঘোষণা করে ঐক্যফ্রন্ট৷
১৪টি সার সংক্ষেপ হলো
১। প্রতিহিংসায় বা জিঘাংসা নয়, জাতীয় ব্যক্তি লক্ষ্য
২। নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা
৩। ক্ষমতার ভারসাম্য
৪। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ
৫। দুর্নীতি দমন এবং সুশাসন
৬। কর্মসংস্থান এবং শিক্ষা
৭। স্বাস্থ্য
৮। জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন
৯। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি
১০। প্রবাসী কল্যাণ
১১। নিরাপদ সড়ক এবং পরিবহন
১২। প্রতিরক্ষা ও পুলিশ
১৩। পররাষ্ট্রনীতি
১৪। জলবায়ু পরিবর্তন
ইশতেহারের ৩৫টি দফাগুলো হলো
প্রতিহিংসায় বা জিঘাংসা নয়, জাতীয় ঐক্যই লক্ষ্য; ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা; নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনী আইন ও নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার; মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ; ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিতকরণ; স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা এবং বিকেন্দ্রীকরণ; তরুণদের কর্মসংস্থান; শিক্ষা; দুর্নীতি দমন; স্বাস্থ্য; খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ; মাদক নিয়ন্ত্রণ; আইন শৃঙ্খলা বাহিনী; আদালত; কৃষি ও কৃষক; শিল্পায়ন; শ্রমিক কল্যাণ; ব্যাংকিং খাত, শেয়ারবাজার ও বাজেট; বিদ্যুৎ ও জ্বালানি; সামাজিক নিরাপত্তা; বয়োবৃদ্ধ; নারীর নিরাপত্তা এবং ক্ষমতায়ন; নিরাপদ সড়ক, যাতায়াত এবং পরিবহন; প্রবাসী কল্যাণ; গণমাধ্যম; ডিজিটাল প্রযুক্তি; সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গিবাদ; ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী; ক্রীড়া ও সংস্কৃতি; জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ; জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ; বর্তমান সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প; মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধা; প্রতিরক্ষা; পররাষ্ট্রনীতি এবং অন্যান্য।