যুক্তরাষ্ট্রে আবারও বেড়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। শনিবার এক লাখ ৫১ হাজার মানুষের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। আর আগের দিন শুক্রবার ১ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়। পরিস্থিতির এ অবনতির পেছনে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট এবং অনেক অঙ্গরাজ্যে টিকাদান কার্যক্রমের ধীরগতির কথা বলা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ৯৮ শতাংশের বেশি লোক বর্তমানে স্থানীয়ভাবে সংক্রমণের ‘উচ্চ’ অথবা ‘মাঝারি’ মাত্রার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা। এক মাস আগে যেখানে ১৯ শতাংশ মানুষ এমন ঝুঁকিতে ছিল।
স্থানীয়ভাবে সংক্রমণ ঝুঁকির মাত্রা নির্ণয়ে গত সাত দিনে প্রতি লাখে সংক্রমণের সংখ্যা এবং মোট নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে সংক্রমণের সংখ্যা- এই দুটি বিষয় বিবেচনায় নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি)।
সংক্রমণের ‘উচ্চঝুঁকি’ ও ‘উল্লেখযোগ্য ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকাগুলোতে ঘরেও মাস্ক পরতে বলছে সিডিসি। টিকাদানে ধীরগতির অঞ্চলগুলোতে এ কার্যক্রমে জোর দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৩০ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৮৭০ জন। এরপর তিনদিন সংক্রমণ কিছুটা কমলেও সেখানে আবার বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা।
পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চল এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় ১৬টি রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে। ফ্লোরিডা, অ্যারিজোনা, টেক্সাস, পেনিসিলভিনিয়া, জর্জিয়া, ইলিনয়, নিউইয়র্ক এবং ক্যালিফোর্নিয়াতে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে আগস্টের শুরু থেকেই দেশটিতে আবারও বাড়ছে মৃত্যু।গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৫৯ জন।
গত সাতদিনের পরিসংখ্যানের তথ্য মতে, গত ১৫ আগস্ট যেখানে মৃত্যু ছিল ৪১৬ জন, সেখানে ১৮ আগস্ট বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ১০৫ জন এবং ১৯ আগস্ট ছিল ১ হাজার ৩০ জন। তবে ২০ আগস্ট এই মৃত্যু আরও বাড়ছে।
পাশাপাশি শনাক্তের সংখ্যাও আবারও বিশ্বের সব দেশকে ছাড়িয়ে সর্বোচ্চ যুক্তরাষ্ট্রে।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় যারা এখনও টিকা নেয়নি, তারাও টিকা নেওয়ার কথা ভাবছে। যদিও লাখ লাখ মানুষ বলছেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা যতই পীড়াপীড়ি করুক, তাদের টিকা নেওয়ার আদৌ কোনও ইচ্ছা নেই।
কিছু গবেষক আরও বড় ধরনের সংক্রমণের পূর্বাভাস দিচ্ছেন। আগস্টের শেষ দিকে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। সেক্ষেত্রে দৈনিক এক লাখ ৪০ হাজার থেকে তিন লক্ষাধিক মানুষ এই ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, যারা ইতোমধ্যেই টিকা নিয়েছে, তাদের মাধ্যমেও এই ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পরতে পারে।