যুক্তরাজ্যে চলমান জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সৌদি আরবই প্রধান বৈদেশিক পৃষ্ঠপোষক বলে ব্রিটিশ বিশ্লেষকদের একটি দলের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
দ্যা হেনরি জ্যাকসন সোসাইটি নামের ওই থিংক ট্যাংক দলের অভিযোগ, ইসলামিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর দেশের বাইরে থেকে অর্থায়ন, বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের প্রচারক এবং সহিংসতা বাড়াতে কাজ করা জঙ্গি দল – এ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি পরিষ্কার সম্পর্ক রয়েছে, যা দিন দিন আরও স্পষ্ট ও বিস্তৃত হচ্ছে।
বিবিসি জানায়, বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানসহ বেশ কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন মসজিদ এবং অন্যান্য ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। তারই অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানে মৌলবাদী মতাদর্শ প্রচারকরা তাদের বক্তব্য প্রচার করছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো জঙ্গিবাদী উপকরণ ও সরঞ্জাম ছড়ানোর ঘাঁটি হিসেবে বিভিন্ন সময়ে কাজ করেছে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, সহায়তাকারীদের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে সৌদি আরব। দেশটির বহু ব্যক্তি ও ফাউন্ডেশন ‘অনুদার, ধর্মীয় গোঁড়ামিপূর্ণ ওয়াহাবি মতবাদ’ প্রচারে ব্যাপকভাবে জড়িত। প্রতিবেদনের বেশ কয়েক জায়গায় বিভিন্ন ঘটনা ও তথ্যের উদাহরণও টানা হয়েছে এর পক্ষে।
এসব অর্থায়ন এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রচারের সঙ্গে সৌদি আরবকে যুক্ত করায় এর প্রতিবাদ জানিয়েছে যুক্তরাজ্যে সৌদি দূতাবাস। তারা এ অভিযোগকে ‘সুনিশ্চিতভাবে মিথ্যা’ বলে দাবি করেছে।
যুক্তরাজ্যে জঙ্গি কর্মকাণ্ডের ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য অনেকদিন ধরেই দেশটির মন্ত্রীরা চাপের ওপর আছেন। সাম্প্রতিক কয়েকটি হামলায় সেই চাপ আরও অনেকটা বেড়ে গেছে।
কিন্তু এরপরও হেনরি জ্যাকসন সোসাইটি’র প্রকাশিত প্রতিবেদন ব্রিটিশ সরকারের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে বলে মনে করছেন সমালোচকরা। কেননা মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় দেশসমূহ, বিশেষ করে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বহুদিনের কূটনৈতিক, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক বিদ্যমান।
বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্যে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের উপস্থিতি এবং প্রভাব নিয়ে ২০১৫ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি রিপোর্ট তৈরির অনুমোদন দেন। কিন্তু সেটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। আদৌ কাজ শেষ হবে কিনা সেটাও এখন সন্দেহ।