ব্রেক্সিট পরবর্তী মধ্যবর্তী ব্রিটিশ নির্বাচনের মাধ্যমে যেখানে স্থিরতা আনার পরিকল্পনা ছিল সেখানে ইঙ্গিত বলছে অস্থিরতার আশঙ্কাই বেশি।
ব্রিটিশ নির্বাচনে রাজনৈতিক জুয়াখেলায় হেরে গেছেন কনজারভেটিভ পার্টির টেরেসা মে। ব্রেক্সিট পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা এগিয়ে নিতে তিনি আগাম নির্বাচন দিয়েছিলেন। তার ধারণা ছিল, ভোটাররা তার দলকে আগের চেয়ে বেশি সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আবারো সরকার গঠন করবেন তিনি এবং এগিয়ে নেবেন ব্রেক্সিটের আনুষ্ঠানিকতা।
কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। বরং প্রাপ্ত ভোটে পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। ৩২৬ টি আসন না পেলে সরকার গঠন করা যায় না যুক্তরাজ্যে, কনজারভেটিভ পার্টি সেখানে অর্জন করেছেন ৩১৭টি আসন। আর লেবার পার্টি পেয়েছে ২৬১ টি আসন। এসএনপি ৩৫ আসন। লিব ডেম পেয়েছে ১২ আসন। অন্যান্য দল পেয়েছে ২৩ আসন। ফলে কনজারভেটিভ পার্টিরও এককভাবে সরকার গঠনের সুযোগ থাকছে না।
যুক্তরাজ্যের সর্বশেষ নির্বাচনটি হয় ২০১৫ সালের ৭ মে। সেই নির্বাচনে সংসদের সাড়ে ৬শ’ আসনের মধ্যে ৩৩১টিতে জয় পেয়ে ক্ষমতাসীন হয় কনজারভেটিভ পার্টি। আর লেবার পার্টি পেয়েছিলো ২৩২ টি আসন। সেই হিসেবে আগের থেকে এবারের নির্বাচনে সমর্থন তাদের কমেছে।
এখন বরং করবিন বলছেন, টেরেসার আসন কমেছে, ভোট কমেছে, মানে জনগণ তাকে ম্যান্ডেট দেয়নি। ফলে ভোট হারিয়েছেন, আত্মবিশ্বাস হারিয়েছেন এবং জনসমর্থন হারিয়েছেন টেরেসা। এসবই যথেষ্ট পদ ছেড়ে যাওয়ার জন্য।
৩২৬ টি আসন না পেলে কোনো দলই এককভাবে সরকার গঠন করতে পারবে না। সেই হিসেবে জোটের চিন্তা করতে হবে টেরেসা মের কনজারভেটিভ পার্টিকেও। এখন পর্যন্ত যে ফলাফল তার উপর ভিত্তি করে বলা হচ্ছে যে এবারের নির্বাচনের ফলে দেশটিতে কোন দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারবে না। ফলে তাদের পার্লামেন্টের অবস্থা হবে ‘ঝুলন্ত’।
২০১৬ সালের জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) যুক্তরাজ্যের থাকা না-থাকা নিয়ে ‘ব্রেক্সিট’ গণভোট হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ছিলেন। ভোটের রায় ক্যামেরনের বিপক্ষে যাওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাগ্রহণ করেন টেরেসা মে।
এই মুহূর্তে নির্বাচনের কোন আইনি বাধ্যবাধকতা ছিল না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে নিজের ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে তাড়াহুড়ো করেই মধ্যবর্তী নির্বাচন দেন। কিন্তু সেখানে বেশি ভোট পেয়েও কনজারভেটিভ পার্টির এমন হার আবার নতুন করে অস্থিরতাই তৈরি করবে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে।