আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশে এখন ৪ কোটি লোক করযোগ্য। তাহলে কেন আমরা তাদের সবাইকে করের আওতায় আনতে পারছি না? যারা কর দেয়ার যোগ্য কিন্তু দিচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এনবিআর বলছে, দেশে কর দেয় ৪৪ লাখ লোক, আমি ধরলাম এটা ৫০ লাখ। এনবিআরে চেয়ারম্যান নিজেই বলেছেন ৪ কোটি মানুষ আয়কর দেয়ার যোগ্যতা রাখে। তাহলে করদাতার সংখ্যা ৪ কোটি নয় কেন?
যারা কর ফাঁকি দেয় তাদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, কেন বাকিরা কর দিবে না? তাহলে আইন কেন রয়েছে? তাদের কেন ধরা হচ্ছে না? এটাতো বেআইনি কাজ। যখন কোন আইনের অবব্যবহার হয়, সেটা দেখা আমাদের দায়িত্ব।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা আয়কর দেবার উপযুক্ত কিন্তু দিচ্ছে না, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। যারাই ট্যাক্স পেমেন্ট করার ক্যাপাসিটি রাখে, তাদের ট্যাক্স নেটের আওতায় নিয়ে আসতে হবেই। কম বেশি যা হোক, কর দিতে হবে কোন ছাড় হবে না। অন্যান্য এলাকায়ও আমরা ছাড়ের পরিমান কম দিব। যেখানে সাধারণ মানুষের উপকার হয়, সেখানে আমরা বেশি বেশি ছাড় দিব। সেটা করতে আমরা রাজি।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের যারা ধনী লোক আছে, তারা এগিয়ে আসে না। এটা খুব খারাপ। তারা বিদেশে গিয়ে যে পরিমাণ শপিং একদিনে করে এর ১০ ভাগের ১ ভাগ ট্যাক্স হিসেবে প্রতিবছর দেয় তাহলে দেশের অর্থনীতি আরও অনেক মজবুত হতো। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জিরো টলারেন্স। আইন করেছি আইনের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। আইনের অবমাননা যারা করবে তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর হবো।
এনবিআরকে উদ্দেশ্য করে মুস্তফা কামাল বলেন, প্রয়োজনে ১ লাখ জনবল দিব। তারা বাড়িতে বাড়িতে যাবে, যারা আয়কর দেয়ার উপযুক্ত কিন্তু দিচ্ছে না তাদের সনাক্ত করবে।
বাজেটে বইতে যেভাবে আছে সেভাবেই রাজস্ব আহরণ হবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা বাজেট দিয়েছি। এখন আর কোন এসআরও (প্রজ্ঞাপন) ইস্যু নয়। আমাদের রেভিনিউ সংগ্রহ করতে হবে। এটা বাড়াতে হবে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠানটির আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট বিভাগের সদস্য ও কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন।