চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মৎস্যজীবী লীগের প্রথম সম্মেলন শুক্রবার, নেতৃত্বে আসতে পারেন যারা

শুক্রবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগের সমমনা সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মৎস্যজীবী লীগের প্রথম আনুষ্ঠানিক সম্মেলন। এই সম্মেলনের মধ্যদিয়ে মৎস্যজীবী লীগ স্বীকৃতি পাচ্ছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের তালিকায়।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

ইতিপূর্বে আওয়ামী লীগ সমমনা সংগঠন হিসেবে ২০০১ সালে পর তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমি রাখলেও তেমন কোন স্বীকৃতি ছিলো না সংগঠনটির। মাঝে নেতৃত্ব নিয়েও দেখা দেয় বিভক্ত।

বিরোধীদলে থাকতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখায় মৎস্যজীবী লীগকে একটি শক্তিশালী প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে ২০১৭ সালের শেষভাবে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলনের নির্শেনা দেন।

এরপর ২০১৭ সালের ১৩ মে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মৎস্যজীবী লীগের বিভক্ত গ্রুপ গুলো নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় বসেন। ওই সভায় পূর্বের সকল কমিটি বিলুপ্ত করে একজন আহ্বায়ক এবং ৫ জনকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে ১০১ সদস্যের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি করে দেন কাদের।  পরে সর্বসম্মতিক্রমে সদস্য সচিব নিযুক্ত হন শেখ আজগর নস্কর।

যদিও গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি’র আহ্বায়ক বাবু নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি এবং সদস্য সচিব শেখ আজগর নস্করের নেতৃত্বে হবিগঞ্জ জেলা সম্মেলনও করে এসেছে গতবছর।  সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। প্রথম অধিবেশনের পর জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি জেলা সম্মেলন করছে, জানতে পেরে দ্বিতীয় অধিবেশনে অংশ না নিয়েই ফিরে আসেন হানিফ।

২০১৭ নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, পরের বছর একাদশ জাতীয় নির্বাচনসহ উদ্ভুত পরিস্থিতির বিচারে তখন সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি।  সবশেষে এ বছর ১৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগের দপ্তর থেকে কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ-যুবলীগ তিন সহযোগি সংগঠন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের সঙ্গে সমমনা সংগঠন মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনের নির্দেশ দেন। সম্মেলন সফল করতে গঠন করা হয়েছে ১০ উপ-কমিটি।

সম্মেলন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবাহান গোলাপ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: মৎস্যজীবী লীগ সম্মেলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে। এরপর তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে আমাদের নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত নিবেন তারা ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবেই থাকবে না সহযোগি সংগঠনের স্বীকৃতি পাবে।

বাংলাদেশের ৩ কোটিরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে মৎস্য উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণনের সঙ্গে জাড়িত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কারা আসছেন এ সংগঠনের নেতৃত্বে। চ্যানেল আই অনলাইনের কাছে থাকা তথ্যমতে সংগঠনটির সভাপতির দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন বাবু নারায়ণ চন্দ্র, লায়ন শেখ আজগর নস্কর, অ্যাড. হারুণ-অর-রশিদ। আর সাধারণ সম্পাদকের দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন মুহাম্মদ আলম, খন্দকার আজিজুল হক হীরা, আলহাজ্ব আবুল বাশার।

সম্মেলন প্রসঙ্গে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব শেখ আজগর নস্কর বলেন: মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই আমি আমার নিজের সবটুকু দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আদর্শ, কর্মসূচি ও প্রচারণায় নিজেকে নিযুক্ত রেখেছি।  আমাদের প্রত্যাশা প্রকৃত ত্যাগী, সাংগঠনিক নেতার হাতেই নেত্রী সংগঠন পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করবেন।

মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতির শৃঙ্খলা উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক মুহাম্মদ আলম বলেন: সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতিকে সামনে রেখে আমরা এগুচ্ছি। সুশৃঙ্খল একটা সম্মেলন আমরা উপহার দিতে চাই।  ১/১১ এর দুঃসময়ে নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে মৎস্যজীবী লীগের ব্যানারে আমরা রাজপথে ছিলাম।  আমি মৎস্যজীবী লীগকে সুসংগঠিত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে চাই। একই সঙ্গে মৎস্যজীবী লীগকে আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ছাত্র মুহাম্মদ আলম ৯৪-৯৫ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকার বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রত্ব হারান। এবং ৯৬’এ আওয়ামী লীগের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনে সক্রিয় আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেও তিনি ছাত্রত্ব ফিরে পাননি।