চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মোবাইল গেমস থেকে ওজিলকে মুছে দিল চীন

আর্সেনাল ছেড়ে তুরস্কে যাচ্ছেন ওজিল

উইঘুর ইস্যুতে মেসুত ওজিলের করা মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ যেন কমছেই না চীনের। ওজিলের মন্তব্যের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি আর্সেনালের খেলা প্রচারও বাতিল করেছিল দেশটি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। এবার একটি মোবাইল গেমস থেকেও ওজিলকে মুছে দিয়েছে তারা।

আন্তর্জাতিক এক বার্তা সংস্থার খবর, উইঘুরদের নিয়ে মন্তব্যের পর জনপ্রিয় ‘প্রো ইভোলুশন সকার (পিইএস)’ মোবাইল গেমস থেকে ওজিলের অংশ মুছে দিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

চায়না ইন্টারন্টে কোম্পানি নেটইজে জানাচ্ছে, ‘চীন সম্পর্কে চরম মন্তব্য’র কারণে ওজিলকে গেমস থেকে সরিয়ে দিয়েছে তারা।

এরমধ্যেই খবর, আর্সেনাল ছেড়ে তুরস্কে যেতে পারেন ওজিল। সেটা অস্থায়ী চুক্তিতে, অর্থাৎ লোনে। জানুয়ারিতে তুর্কি ক্লাব ফেনারবাখ হতে পারে জার্মান মিডফিল্ডারের গন্তব্য।

আর্সেনাল মিডফিল্ডার ইংল্যান্ডে অসন্তুষ্ট এবং সে কারণেই লন্ডন ছেড়ে চলে যেতে পারে জানাচ্ছে অনেক গণমাধ্যম। তুর্কি দৈনিক ফোটোম্যাক জানায়, ওজিলের সঙ্গে ফেনারবাখ চুক্তির ‘খুবই কাছে’।

২০১৩ সালে রিয়াল মাদ্রিদ থেকে আর্সেনালে যোগ দেন ওজিল। ক্লাবের সঙ্গে ভালোবাসা-ঘৃণার সম্পর্ক নিয়েই এপর্যন্ত গানারদের জার্সিতে ২০০-এর বেশি ম্যাচ খেলেছেন।

এদিকে, উইঘুর ইস্যুতে ওজিলের পাশে দাঁড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেই। তবে উইঘুরদের উপর দেশটির কঠোরতা নিয়ে ওজিল যেভাবে কথা বলেছেন সেটাকে ভুল বলেছেন ইয়াইয়া তোরে।

উইঘুরদের সঙ্গে হওয়া আচরণ নিয়ে জার্মান ফুটবলার ওজিল সম্প্রতি একটি টুইট করেন। যার জেরেই যত বিতর্ক।

বিতর্কে ঘি ঢালেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পম্পেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ওজিলকে সমর্থন দেয়ার কথা জানান। বলেন, ‘চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রচারমাধ্যম মেসুত ওজিল এবং আর্সেনালের পুরো মৌসুমের খেলা সেন্সর করতে পারে, তবে সত্য বিরাজ করবেই। সিসিপি বিশ্ব থেকে উইঘুর এবং অন্যান্য ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো আড়াল করতে পারবে না।’

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাশে পেলেও বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক মিডফিল্ডার ইয়াইয়া তোরেকে পাশে পাননি ওজিল। পরিস্থিতি ‘জটিল’ কারণ তারা দু’জনেই মুসলিম। ওজিলের সাথে দ্বিমত পোষণ করে তোরে বলেছেন, অ্যাথলেটদের রাজনৈতিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা ঠিক হবে না।

আইভরি কোস্টের সাবেক এ ফুটবলার বলেন, ‘ফুটবলারদের ফুটবলের সঙ্গে এবং রাজনীতিবিদদের রাজনীতির সঙ্গে থাকতে হবে। আপনি এ ধরনের ইস্যুর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারবেন না, কারণ এটি বড় সমস্যা। একজন মুসলমান হিসাবে এটি জটিল বিষয় এবং এটি তার(ওজিল) নিজের পছন্দ। তিনি তার মন্তব্য করেছেন, তবে আমার মনে হয় এটা বলা ভুল ছিল।’

বার্সা-ম্যানচেস্টারে খেলার পর বর্তমানে চীনে আছেন তোরে। পাঁচ মাস হল দেশটির ক্লাব কিংদাও হুয়াংহাইয়ে যোগ দিয়েছেন। চীনে ব্যবসার জন্য সাংহাইতে একটি রেস্টুরেন্টও খুলেছেন। তাই মনে করা হচ্ছে, সব হিসাব-নিকাষ করে বিতর্ক থেকে আগেই নিজেকে সরিয়ে রাখছেন এই আইভরিয়ান।

কী লিখেছিলেন ওজিল? ১৩ ডিসেম্বর করা টুইটে ওজিল চীনের উইঘুর মুসলিমদের ‘নির্যাতনের প্রতিরোধকারী যোদ্ধা’ বলে প্রশংসা করে দেশটির নীতির কঠোর সমালোচনা করেন। পাশাপাশি উইঘুরে নির্যাতিতদের রক্ষায় মুসলিম বিশ্ব কেনো এগিয়ে আসছে না সেজন্য হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিশ্বের নীরবতায় অবাক এ জার্মান ফুটবলার।

ওজিল নিজে তুরস্ক বংশোদ্ভূত জার্মান মুসলিম। তার বক্তব্যের সঙ্গে আর্সেনালের কোনো সম্পর্ক নেই বলে বিবৃতি দিয়েছে ইংলিশ ক্লাবটি। মন্তব্যকে ওজিলের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন বলেছে।

ওজিলের কথার জেরে চীনের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত ব্রডকাস্টার সিসিটিভি গত রোববার আর্সেনাল-ম্যানচেস্টার সিটি ম্যাচ দেশটিতে দেখানো বন্ধ করে দেয়। দেশটির ফুটবল সংস্থা বলেছে, ওজিলের মন্তব্য অনভিপ্রেত।