পুরান ঢাকার ১২ নম্বর রোকনপুরের কাজী বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করলে দেখা যাবে মোঘল আমলের নক্সায় নির্মিত কাজী বাড়ী জামে মসজিদ। বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও ভিতরে প্রবেশ করে কারুকার্য করা এই মসজিদ দেখে অবাক হন মুসল্লিরা। সাথেই কাজী বাড়ী।
সেখানে আছেন ১৬ শতাব্দীতে আরব দেশ থেকে আসা পীর সৈয়দ আহমদ বক্সের বংশধর কাজী সাদ উল্লাহীল আলীম। তাঁর কাছেই জানা যায় মসজিদ নির্মাণের ইতিহাস। তিনি জানান ১৬ শতাব্দীতে সৈয়দ আহমেদ বক্স মোঘল সম্রাটের কাছ থেকে জায়গারী পাওয়ার পর ধোলাই খাল সংলগ্ন এলাকায় জঙ্গল পরিস্কার করে এই মসজিদ নির্মাণ করেন এবং ধর্ম প্রচার শুরু করেন।
এই মসজিদের পাশেই আছে সৈয়দ আহমেদ বক্স পীর সাহেবের কবর। মসজিদের ভিতরে আছে কষ্টি পাথর দিয়ে করা একটি শিলালিপি। সাদ জানান তখনকার দিনে আর্কিটেকচারাল ডিজাইন অনুসারে মসজিদের উপরে চিনি টুকরা বা প্লেট ভেঙ্গে করা ছোট ছোট গ্লাসের টুকরা দিয়ে নক্সা করা হয়েছে।
এর সাথে আছে কিছু মোঘল আমলের স্ট্রাকচার। সৈয়দ আহমেদ বক্স পীর সাহেবের উত্তর পুরুষ ছিলেন পীর সাহেব কাজী আবদুর রউফ। জানা যায় মসজিদ নির্মাণের ২’শ/৩’শ বছর পর তাঁকে স্বপ্নে নির্দেশ দেওয়ার পর এই মসজিদ সংস্কার করেন।
এরপরে কাজী আবদুর রউফের ছেলে কাজী আবদুল মতিন মসজিদের সামনে ছাউনি করে দেন। কালের পরিক্রমায় কিছু পরিবর্তন হলেও মূল কাঠামো একই রয়ে গেছে। ১৮৫০ সালে কাজী আবদুর রউফের বাবা মৌলভী রহিম বক্স আবারো মসজিদটির সংস্কার করেন।
তিনিও পীর সাহেব ছিলেন। তাঁর চেষ্টায় এখানে জুম্মার পড়া শুরু হয় বলে জানা যায়। তখন পীর সাহেবের মসজিদ হিসেবে পরিচিত ছিল। কাজী বাড়ীর পারিবরিক মসজিদ হলেও সবাই নামাজ পড়তে পারেন। ঢাকার যে কোন জায়গা থেকে ধোলাই খালের টায়ারের গলি এসে কাজী বাড়ী জামে মসজিদের নাম বললে দেখিয়ে দেবে সবাই।