আরিফ হোসেন হাওলাদার, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের নারায়নপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তবে এখন আর আরিফ ছাত্রলীগের কেউ নন। তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যাক সম্মান বুঝি বাঁচল ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের!
কত সহজ হিসাব, যখন কেউ এ রকম কাজ করে ধরা পড়ে সাথে সাথে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কি মহিমাময় তরিকা! কিন্তু আরিফের এই অপরাধের জন্য দলের যে ভাবমূর্তি নষ্ট হলো, তার কি হবে? তার মূল্য কে দেবে? যে ছয়জনকে ধর্ষণ করে ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে তাদের সম্মানহানীর মূল্য কে দেবে?
এর আগেও আমরা দেখেছি, আওয়ামী সংগঠনের কেউ কোনো অপকর্ম করলে প্রথমে চেষ্টা করা হয় তাকে দলের কেউ না বলে চালিয়ে দেওয়া বা প্রচার করা। কিন্তু কোনোভাবে যদি প্রমাণপত্রসহ ধরা পড়ে যায় তখন সাথে সাথে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করার রীতি চালু আছে।
বগুড়ার তুফানের কাণ্ড সারাদেশের মানুষ জেনেছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। পরবর্তীতে জানা গেছে, তাকে জেল হাজতে সব রকমের সুযোগ সুবিধাও নাকি দেওয়া হয়েছে। তারপর? তারপরের খবর আর কেউ জানে না, আর কোনোদিন জানবে কি না সন্দেহ আছে।
প্রশ্ন হলো, কেন আওয়ামী লীগ সরকার নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেবে না, ২৪ ঘন্টার মধ্যে আরিফকে ধরিয়ে দিতে হবে। আমাদের পুলিশবাহিনী পারে না এমন কোনো কাজ নেই। সদিচ্ছা থাকলে সব সম্ভব।
আসছে একাদশ সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনে জনগনের ভোট লাগবে। যে সচেতন নাগরিক ভোটটি নৌকায় দেবেন বলে মনস্থির করে রেখেছেন, তিনি যখন জানবেন আরিফের এই ঘটনা, তখন কি তার মনে একবারও দ্বিধা কাজ করবে না?
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এই যে খারাপ ধারণা তৈরি হচ্ছে, এর ফলাফল তো ভোট বাক্সে ঠিকই পাওয়া যাবে।
একজন ছাত্রলীগ নেতা কতটা ক্ষমতাবান নিজেকে মনে করে যে, একের পর এক ধর্ষণ এবং ধর্ষণচিত্র তুলে সেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। সমাজ, নিজ পরিবার এবং ওই অসহায় নারীদের পরিবারের কথা একবারও মনে আসেনি।
আমরা দেখতে চাই আরিফকে গ্রেপ্তার করে তার উপযুক্ত বিচার। আরিফদের জন্য আওয়ামী লীগের মত বিশাল সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হওয়ার যে সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে তা বন্ধ হোক।
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)