বছরে যা আয় তার ৭৫ শতাংশই খেলোয়াড়দের বেতন দিতে খরচ হয়ে যায়, ২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে এমন দেখিয়েছে বার্সেলোনা। কোন খেলোয়াড় কত বেতন পান সেটার হিসাব না দিলেও অধিকাংশই যে মূল তারকা লিওনেল মেসির পেছনে খরচ হয়, সেটা কম-বেশি সবারই জানা।
আর্জেন্টাইন তারকার বেতনের সেই হিসাব সামনে এনেছে স্প্যানিশ পত্রিকা এল মুন্ডো। চোখ কপালে ওঠানোর মতো অর্থের অঙ্কের সঙ্গে বার্সার আর্থিক দুরবস্থার পেছনের কারণ যে অনেকটা মেসি, সেটাই ইঙ্গিত করেছে এল মুন্ডো।
২০১৭ সালের নভেম্বরে বার্সার সঙ্গে নতুন চুক্তিতে বসেছিলেন লিওনেল মেসি, যার শেষ চলতি বছরের ৩০ জুন। নিজেদের ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়কে খুশি করতে কোনো আবদারই অপূর্ণ রাখেননি তখনকার প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তেমেউ। এক চুক্তিতে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া ফুটবলার বানিয়ে দেন ছয়বারের ব্যালন ডি’অরজয়ী মহাতারকাকে।
এল মুন্ডো বলছে, চার বছরে মেসির সঙ্গে ৫৫ কোটি ৫২ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৯ ইউরোর চুক্তি সেরেছিলেন বার্তেমেউ। বাংলাদেশি অঙ্কে যার পরিমাণ ৫ হাজার ৭০২ কোটি ৮১ লাখ ৪০ হাজার ৭৮২ টাকা!
২০১৭ সাল থেকে বছর প্রতি বার্সার কাছ থেকে ১৩৮ মিলিয়ন ইউরো পারিশ্রমিক পান মেসি। যার মধ্যে ১১৫ মিলিয়ন নির্দিষ্ট, আর আনুগত্যের বোনাস মিলিয়ে এরসঙ্গে যোগ হয় আরও ৭৮ মিলিয়ন। সপ্তাহ প্রতি ৩৩ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের বেতন হল ২.৬৬ মিলিয়ন ইউরো।
গত শনিবার বার্সার সঙ্গে মেসির ৩০ পৃষ্ঠার চুক্তিনামা ফাঁস করেছে এল মুন্ডো। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তির আরও পাঁচ মাস বাকি থাকলেও ৯২ শতাংশ অর্থাৎ, ৫১ কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৫ ইউরো এরইমধ্যে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পুরেছেন মেসি।
এই চুক্তিনামা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় উয়েফা থেকে চাপের মুখে পড়েছে বার্সা। করোনার মধ্যে তাদের ঋণের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১ বিলিয়ন ইউরো। অন্যদিকে মেসিও তার চুক্তির মূল্য যে খুব বেশি রক্ষা করতে পেরেছেন এমনও নয়। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে লা লিগা জিতলেও ২০১৫ সালের পর থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ অধরাই রয়ে গেছে তাদের।
মেসি নিজেই বলছেন ইউরোপ সেরা হওয়ার মতো স্কোয়াড তাদের নেই। অথচ তার এক বছরের বেতন দিয়ে আগামী মৌসুমে মনের মতো খেলোয়াড় কেনাকাটা করতে পারবেন বর্তমান কোচ রোনাল্ড কোম্যান। একদিকে ক্লাবের দুরবস্থা, অন্যদিকে এক খেলোয়াড়ের অবিশ্বাস্য বেতন! ক্লাবের নতুন প্রেসিডেন্ট যিনিই হবেন, তাকে সামলাতে হবে বেশ কঠিন এক পরিস্থিতি।