চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মুজাহিদের যতো প্রমাণিত অপরাধ

২০১২ সালে ২১ জুন আলী আহসান মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরধী অপরাধের ৭টি অভিযোগ গঠন করে ট্রাইব্যুনাল। বিচারে ওই অভিযোগগুলোর মধ্যে ৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়।

২০১৩ সালে র ১৭ জুলাই তাকে তিনটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং তৃতীয় অভিযোগে পাঁচ বছর এবং সপ্তম অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বাকি দুইটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

মুজাহিদের প্রমাণিত অপরাধগুলোর মধ্যে;

প্রথম অপরাধ

দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্থানী সেনারা এ দেশীয় কিছু সহযোগীদের নিয়ে সাধারণ মানুষদের নির্যাতনের বিবরণ দিয়ে একটি লেখায় তুলে ধরেন। এ লেখার বিরোধীতা করে ১৬ সেপ্টেম্বর ৭১ ‘দৈনিক সংগ্রামে’ একটি প্রবন্ধ ছাপানো হয়। এ প্রবন্ধে সিরাজুদ্দীনকে ‘ভারতের দালাল’ অভিহিত করা হয়। ১০ ডিসেম্বর ঢাকার চামেলীবাগের বাসা থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটার সঙ্গে মুজাহিদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এ জন্য তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল।

দ্বিতীয় অপরাধ

মুক্তিযুদ্ধের সময় জুনের প্রথম সপ্তাহে ফরিদপুরের রথখোলা গ্রামের রনজিৎ নাথ ওরফে বাবু নাথকে খাসাবপুর মসজিদের কাছ থেকে ধরে পুরাতন সার্কিট হাউসের কাছে নিয়ে যায় রাজাকাররা। সেখানে মুজাহিদের নির্দেশে নির্যাতন করে রাজাকাররা। এরপর বাবু নাথ সেখান থেকে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় মুজাহিদের অপরাধ প্রমাণিত হলে তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

তৃতীয় অপরাধ

৭১ সালের ৩০ আগস্ট রাতে মতিউর রহমান নিজামীকে সঙ্গে নিয়ে নাখালপাড়ার পুরাতন এমপি হোস্টেলে পাকিস্থানী সেনাদের ক্যাম্পে যান মুজাহিদ। সেখান সুরকার আলতাফ মাহমুদ, বিচ্ছু জালাল, শাফী ঈমাম রুমি এবং বদিউজ্জামানসহ কয়েকজনকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। এই অপরাধে মুজাহিদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে বিচ্ছু জালাল ছাড়া অন্যদের হত্যার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান ট্রাইব্যুনাল। 

চতুর্থ অপরাধ

মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনিস্টিটিউটে মাঠে পাকিস্থানী সেনাদের নিয়ে বাঙ্গালী নিধনের পরিকল্পনা করতেন মুজাহিদ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত জেনে রায়ের বাজার বদ্ধভূমিতে ১৪ ডিসেম্বর হত্যা করা হয় অসংখ্য বুদ্ধিজীবীকে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে মুজাহিদের জড়িত থাকার প্রমাণ পান আদালত। এই জঘন্য অপরাধে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

পঞ্চম অপরাধ

মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৩ মে বেলা ২টা থেকে আড়াইটার মধ্যে রাজাকার কালু বিহারী, ওহাব, জালাল ও অন্য সহযোগিদের সাথে নিয়ে মুজাহিদ ফরিদপুরের বকচর গ্রামের হিন্দুদের ওপর হামলা চালায়। সেখানে মুজাহিদের নির্দেশে বীরেন্দ্র সাহা, নৃপেণ সিকদার, সানু সাহাসহ কয়েকজনকে হত্যা করার ঘটনা প্রমাণিত হয়। এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।