আবু সাইদ মন্টু, ৬৫ বছর বয়সী এই মুক্তিযোদ্ধা এখন পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে অচল প্রায়। বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের খুকনী গ্রামে। সংসার বলতে প্রতিবন্ধী দুই ছেলে। দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন।
বড় ছেলে এনামুল ও ছোট ছেলে জাকারিয়া দুইজনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। এনামুলের হুইল চেয়ার থাকলেও জাকারিয়ার হুইল চেয়ার না থাকায় তাকে রাতদিন ঘরের মধ্য শুয়ে বসে কাটাতে হয়।
আবু সাইদ মন্টু বলেন,’ দুইটা ছেলে নিয়ে কীভাবে জীবন যাপন করছি তার খবর কেউ রাখে না। সংসারের আয় বলতে মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা পাই তা পরিবারের তিন জনের ওষুধ কিনতে ফুরিয়ে যায়। আমার স্ত্রী সুতার কুন ভাঙ্গিয়ে যা আয় করে তাই দিয়ে কোন রকম সংসার চলে’।
মুক্তিযোদ্ধা পরিবার হওয়া সত্ত্বেও মিলছে না বিশেষ কোনো সাহায্য। পাচ্ছেন না কোনো আশ্বাস মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় বা অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে। সব মিলিয়ে চরম অসহায়, মানবেতর এক জীবন বয়ে বেড়াচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা মন্টুর পরিবার।
মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করা এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘যে দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজ হাতে যুদ্ধ করলাম, সে দেশের মাটিতে আমি ও স্ত্রী-সন্তানেরা কি এভাবেই তিলে তিলে, ধুঁকে ধুঁকে শেষ হয়ে যাবো ? মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি কোনো জাতির শ্রেষ্ঠ উপহার কি এ-ই?’
তার স্ত্রী হেলেনার বুকভাঙা আর্তি, ‘একবার যদি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে পারতাম! একবার যদি আমাদের কষ্টগুলো তাঁকে বোঝাতে পারতাম! একবার যদি তিনি মুখ তুলে চাইতেন এই হতভাগ্যদের দিকে!’