চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মিলা কুনিসের জানা অজানা কিছু কথা

হলিউডের জনপ্রিয় এবং এক সময়ের সেরা আবেদময়ী অভিনেত্রী মিলা কুনিস। ‘ব্ল্যাক সোয়ান’ খ্যাত এই অভিনেত্রী তার দুর্দান্ত অভিনয় আর আবেদনময়ী শরীর দিয়ে হলিউডে বেশ পোক্ত জায়গা করে নিয়েছেন। অভিনয় করেছেন ফরগেটিং সারাহ মার্শাল, ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিটস, পিরানহা, ম্যাক্স পাইন, গেট ওভার ইট, আমেরিকান সাইকো ২, ডেট নাইটসহ আরো অনেক চলচ্চিত্রে। সম্প্রতি ‘দ্য টকস’ কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে নিজের পছন্দ অপছন্দের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

প্রশ্ন: মিস কুনিস, আপনি কি নিজেকে পারফেকশনিস্ট বলে মনে করেন?

মিলা কুনিস: এটাই মনে হয় একমাত্র বিষয় যাতে আমি ব্যর্থ হয়েছি। আমি নিজেকে কখনই পরিপূর্ণতা দেবার চেষ্টা করি না। আমি মনেও করি না যে এটা আসলে অর্জন করা সম্ভব। কেউ কখনই নিজের জীবনকে পরিপূর্ণতা দিতে সক্ষম হয়না। কারণ প্রত্যেকের মধ্যেই আসলে সীমাবদ্ধতা থাকে। কারো উচ্চতা যদি ছয় ফিটের চেয়ে কম হয় তো সে ছয় ফিটের বেশি কোনোদিনই যেতে পারবে না। সে পৃথিবীর যত কিছুই অর্জন করুক না কেন তার উচ্চতা সবাই ছয় ফিটের কম বলেই জানবে। তাই আমি মনে করিনা পৃথিবীতে পরিপূর্ণতা বলে কোনো জিনিস আছে।

প্রশ্ন: হলিউডে আপনার বয়সি অনেক নারীই এখন এই পরিপূর্ণতা অর্জনে মরিয়া।আপনি কি মনে করেন পরিপূর্ণতা অর্জনের এই চেষ্টা সাম্প্রতিক সময়ে হলিউডের কোনো বাতিক?

মিলা কুনিস: এটা অনেক দুঃখজনক যে বিষয়টি সত্যি। সবাই একই রকম হতে চায়। একে অপরকে নকল করে। নিজেদের আলাদা কোনো সত্ত্বাই তারা বজায় রাখছে না। খুবই অদ্ভূত লাগে যে প্রত্যেকের মুখের সাঁজের বৈশিষ্ট একই। একজনকে যদি চুল রং করতে দেখে তো বাকিদের মধ্যে চুল রং করার হিড়িক পড়ে যায়। আমার মনে তাদের নিজস্ব কোনো ব্যক্তিত্বই নেই। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

প্রশ্ন: এর কারণ কী? এটা কি বিনোদন এবং ফ্যাশন বিশ্বের তৈরি বলে আপনি মনে করেন?

মিলা কুনিস: আমি আসলে জানি না মেয়েগুলো কেনো এটা করে থাকে। এটা একটা কারণ হতে পারে যে, ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে সুন্দর, ফ্যাশনেবল, পরিপূর্ণ মুখগুলো দেখে তারা নিজেকেও ওভাবে দেখতে চায়। তবে দুঃখের বিষয় মেয়েরা বোঝেনা যে তা আসলে ফটোশপ করা। আমার মনে হয় না পারফেকশন বলে কোনো জিনিস আছে। আমার কাছে যেটা সুন্দর বলে মনে হয সেটা আপনার কাছে নাও মনে হতে পারে। এর মানে এই নয় যে আমি সঠিক আর আপনি ভুল। এটা শুধুই মতভিন্নতা।

প্রশ্ন: কিন্তু ‘ব্ল্যাক সোয়ান’ চলচ্চিত্রের জন্য আপনিও তো নিজের ওজন অনেক কমিয়েছিলেন।হঠাৎ করে আপনাকে হড্ডিসার মনে হচ্ছিলো। সেটা কি পারফেকশনের জন্য করেন নি?

মিলা কুনিস: (একঝলক হাসলেন)ও আচ্ছা বেছে বেছে এটাই খুঁজে পেলেন তাহলে? তবে জেনে নিন, আমি এটা নিজের জন্য করি নি। চরিত্রের প্রয়োজনে আমাকে বাধ্য হয়ে ওজন কমাতে হয়েছিলো। তবে বেশ দ্রুতই ওই হাড়িয়ে যাওয়া ওজোন আবার ফিরিয়ে এনেছিলাম।

প্রশ্ন: নিজেকে জিরো ফিগারে দেখতে কি আপনার ভালো লাগে?

মিলা কুনিস:  না। ব্ল্যাক সোয়ানের জন্য এটা করতে হয়েছিলো কিন্তু তা ছিলো সত্যিই বিরক্তকর। মনে হচ্ছিলো আমাকে ‘লর্ড অব দ্যা রিং’র গলুমের মত লাগছিলো। কারো সঙ্গে অনেক দিন পর দেখা হলে আমাকে জড়িয়ে ধরতে এসে ভয় পেয়ে যেতো তারা। সঙ্গে সঙ্গেই জিজ্ঞেস করতো কী হয়েছে। খুবই বিরক্তিকর ছিলো সেটা। নিজের এমন চিকন শরীর ঢাকার জন্য আমি মোটা মোটা সোয়েটার পড়তাম।

প্রশ্ন: হলিউডে আপনার বয়সি সবাই কি অনেক প্রতিযোগিতা করে?

মিলা কুনিস: এটা সত্যি আবার সত্যি নাও। বিষয়টি মতামত নির্ভর। আমাকে হয়তো কোনো পরিচালক পাত্তাই দেবে না। আবার কোনো পরিচালক ভাববে আমার মত অভিনেত্রী আর দ্বিতীয়টি নেই।

প্রশ্ন: আপিনি কি ছোটোবেলা থেকেই অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন?

মিলা কুনিস:  না, মাঝে মধ্যে ইচ্ছা হতো শিক্ষক হই আবার কখনও ভাবতাম ডাক্তার হবো। মুলত অভিনয় বাদে আর সবকিছুই করার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু সেই অভিনয়ইই শেষ পর্যন্ত করতে হয়েছে।

প্রশ্ন: অন্যের জীবন থেকে কি কখনও শিক্ষা নিয়েছেন?

মিলা কুনিস: অবশ্যই। সবকিছুই মনে হয় অন্যকে দেখে শিখেছি। হলিউড এমন একটি জায়গা যা আপনাকে তৈরি করে আপনাকেই নামানোর জন্য। প্রতিমুহূর্তে আপনার চারপাশে কি ঘটছে সে সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়। কারণ আপনার উঠার গল্পের মার্কেট ভ্যালু নেই। আপনি অভিনয়ে ভালো করছেন এটা কোনো ভালো স্টোরি না কিন্তু যেই মুহূর্তে আপনার সম্পর্কে খারাপ কিছু রটবে তা এতো দ্রুত ছড়িয়ে যাবে যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। তাই আমি কখনই আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনো কথা অন্যের সঙ্গে শেয়ার করি না।