স্কোয়াডে পাঁচ পেসার থাকার পরও চট্টগ্রাম টেস্টে খেলেছেন কেবল মোস্তাফিজুর রহমান। স্পিন চতুষ্টয়ের উপর অতি নির্ভরতার মাশুল দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হারতে হয়েছে সিরিজের প্রথম ম্যাচে।
বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া মিরপুর টেস্টে চোটের কারণে খেলতে পারছেন না সাকিব আল হাসান। ছিটকে গেছেন দল থেকে। সেরা অলরাউন্ডার না থাকায় শেষ টেস্টে কমে গেল এমন একজন, যিনি ফ্রন্টলাইন বোলার ও ব্যাটসম্যান।
স্কোয়াডে তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান ছাড়া আর কোনো স্পেশালিস্ট স্পিনার নেই। দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে তাই চার নম্বর স্পিনার নেয়ার সুযোগও নেই।
টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সাকিবের অভাব পূরণ করা। দুটি দিক সামলানোর দক্ষতা আছে সৌম্য সরকারের। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মিডিয়াম পেস বোলিংটাও পাওয়া যাবে। এজন্যই হয়ত তাকে শেষ মুহূর্তে যোগ করা হয়েছে স্কোয়াডে, সাকিবের বদলি হিসেবে।
ভাবনা এমন হলে মোস্তাফিজ সঙ্গী হিসেবে পাবেন সৌম্যকে। যদিও নিশ্চিত করে কিছু বলার সময় এখনো আসেনি।
নিকট অতীতে তাকালে দেখা যাবে উইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুরে কোনো পেসার ছাড়াও খেলেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে সেটি ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজেই। ২০১৮ সালের শেষ দিকে। চট্টগ্রামে সিরিজের প্রথম টেস্টে সেসময় একমাত্র পেসার ছিলেন মোস্তাফিজ। মিরপুরে পরের টেস্টে তাকে রাখা হয়নি একাদশে। স্পিন চতুষ্টয়ের সঙ্গে যোগ হয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এবার অবশ্য তিনি স্কোয়াডেই নেই।
সেই টেস্টে সাকিব-মিরাজ-নাঈম-তাইজুলরা মেতেছিলেন উইকেট দখলের উৎসবে। সেরা দল নিয়ে টাইগার ডেরায় আসা ক্যারিবীয়রা হেরেছিল ইনিংস ও ১৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে। দুই টেস্টের সিরিজে ৪০ উইকেট দখল করেছিলেন স্পিনাররা।
করোনায় দীর্ঘ বিরতির পর হোম অব ক্রিকেটে টেস্ট ফেরার ম্যাচে মিরপুরের উইকেট কেমন হবে সেটি নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। কেননা চট্টগ্রামের উইকেট পঞ্চম দিনেও সেভাবে ভাঙেনি। ব্যাটসম্যানদের পক্ষেই গেছে উইকেটের আচরণ।
মিরপুরের উইকেটও যে অপ্রত্যাশিত আচরণ করবে না, সেটির নিশ্চয়তা নেই! মঙ্গলবার দুপুরে অনুশীলনে এসে সবার আগে শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের ৬ নম্বর উইকেট দেখলেন বোলিং কোচ ওটিস গিবসন ও হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এই উইকেটেই সম্ভবত হতে চলেছে দুই দলের জন্যই মহাগুরুত্বপূর্ণ শেষ টেস্টটি।
উইকেটের আচরণ কেমন হবে সেটি অনুমান করে একাদশ ঠিক করা হবে। সাকিব না থাকায় দলে পরিবর্তন কম করে হলেও একটি হবেই। উইকেট স্পিনিং নাকি কিছুটা পেসবান্ধব হবে সেটিও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। মঙ্গলবার টাইগারদের অনুশীলনের কিছু দৃশ্য আভাস দিচ্ছে পেসারদের জন্য কিছুটা সহায়তা থাকলেও থাকতে পারে।
চট্টগ্রামের মতো পেসারদের ব্রাত্য নাও হতে পারে। সে ইঙ্গিত মিলল মঙ্গলবারের অনুশীলনে। ইবাদত হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদদের কারো জায়গা হবে কিনা সেটি জানতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে যদিও।
মঙ্গলবার মিরপুরের পড়ন্ত বিকেল। অনুশীলনে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, ইয়াসির আলি রাব্বি। তিন স্লিপ ফিল্ডারের পর গালিতে মোহাম্মদ মিঠুন। ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুকের থ্রো’তে ব্যাটের পরশ বুলিয়ে দিচ্ছেন হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এমন ফিল্ডিং সেশন ইঙ্গিত দেয় পেসারদের পক্ষে।
চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট হারের পেছনে ক্লোজ-ইন ফিল্ডারদের দায় কম নয়। বেশ কয়েকটি ক্যাচের সুযোগ এসেছিল। লুফে নিতে পারেননি ব্যাটসম্যানকে ঘিরে থাকা ফিল্ডাররা। সেই ভুল যেন আর না হয়, সেই মহড়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে টাইগারদের দিনের অনুশীলন।