‘মেঘলা দিনের একটি গান বাজানো হচ্ছে, ভিডিওতে দেখানো হলো খোলা আকাশের নিচে গাড়ির টায়ার! মেঘলা দিনের সঙ্গে টায়ারের সংযুক্তি কোথায়? এছাড়া ভিডিওর নামে যে পরিমান অশ্লীলতা জমা হচ্ছে, তার জন্য সেন্সর বোর্ড প্রয়োজন!’ বললেন ফাহমিদা নবী।
তিনি আরও বলেন, ‘খারাপ কথার গান হলে আমি কিন্তু গাই না। এটা সচেতনতা থেকে। তবে আমি নবীনদের সঙ্গে কাজ করি। তাদের কথা যদি ভালো না লাগে, আমি নিজে পরিবর্তন করি। আমি লিখে দিই। যেন তারা উৎসাহ পায়।’
‘গান কী দেখার না শোনার’—এমনি বিষয় নিয়ে বৈঠকির আয়োজন করে বাংলা ট্রিবিউন। প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে আজ শনিবার সকালে মিথিলা ফারজানার সঞ্চালনায় এই বৈঠকিতে অংশ নেন গীতিকবি ও গবেষক মোহাম্মাদ রফিকউজ্জামান, সংগীতশিল্পী ফাহমিদা নবী, বাপ্পা মজুমদার ও ইমরান, এমআইবি প্রেসিডেন্ট ও লেজার ভিশনের চেয়ারম্যান এ কে এম আরিফুর রহমান, নির্মাতা চন্দন রায় চৌধুরী, রবির কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট-এন্টারটেইনমেন্ট ম্যানেজার জ্যাকলিন এলিজাবেথ মজুমদার, রেডিও ফুর্তির স্টেশন ম্যানেজার ও প্রোগ্রাম অ্যান্ড আর্টিস্ট পিআর সার্জিনা ইসলাম এবং বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল।
রেডিও স্টেশন শিল্পীদের গান প্রচারের আগে কোনো অনুমতি নেন? তাদের সম্মানি দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করেন? এমনি প্রশ্নের জবাবে সার্জিনা ইসলাম বলেন, ‘আসলে এখানে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। এ বিষয়ে যদি একটি বোর্ড থাকে, যারা শিল্পীদের সম্মানির বিষয়টি দেখবে, তাহলে সম্ভব।’
বাপ্পা মজুমদার বলেন, ‘এটা খুবই জরুরি। কিন্তু তারা যা করছেন তা মোটেও ঠিক নয়। তারা অনুমতি পর্যন্ত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। এটা অসম্মানজনক। এমন হতে থাকলে, আমরা সব রেডিওকে বয়কট করব। আসুন আমরা সবাই বিষয়টি নিয়ে কথা বলি। তারা অবৈধভাবে গান প্রচার করছে। সম্মানি তো দূরের কথা, তারা অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করছে না।’
সম্প্রতি ইমরানের একটা গান ইউটিউবে এক কোটিবার দর্শকরা দেখেছেন। এর আগেও তার একটি গানে এমন রেকর্ড হয়েছে। ইমরান বলেন, ‘ভিডিওটা শুধুই প্রচারণার মাধ্যম। এখন গান শোনার মাধ্যম কনভার্ট হয়ে গেছে। গান শোনানোর জন্যই এটি (ইউটিউব) ব্যবহার করা হয়। আর ভিউ বেশি হলেই তা হিট নয়। একটা গান ১ কোটি ভিউ হলেই যে টিকে থাকবে, তা নয়। সংগীত, কথা, ভিডিও- সব মিলিয়ে প্রশংসিত হলে তবে আমি সন্তুষ্ট।’
বিশিষ্ট গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান বলেন, ‘আমাদের সময়ে যখন টেলিভিশন মিডিয়া ছিল না। আমরা তখন অনুষ্ঠানে-আসরে গিয়ে গান শুনতাম। আর টেলিভিশন আসার পর আমরা গানের অনুষ্ঠান দেখতাম। তবে বরাবরই গান শোনার বিষয়টিই মুখ্য ছিল। কবিগুরু গানে গানে বলেছেন— তোমায় গান শোনাব। তিনি কখনও বলেননি, তোমায় গান দেখাব! তাই অবশ্যই গান শোনার বিষয়।’