মাহমুদুল হকের লেখা আমার ভীষণ পছন্দ। তার দেখার চোখ, গল্প বলার ভঙ্গিতে আমি মুগ্ধ। তার জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানাতেই ১৬ ডিসেম্বর তার গল্পেই মুক্তি দিয়েছি শর্টফিল্ম ‘কালো মাফলার’। -বিজয় দিবসে ‘কাউন্টার সিনেমা’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর মাহমুদুল হকের গল্প অবলম্বনে নির্মিত নিজের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনকে বলছিলেন তরুণ নির্মাতা পার্থিব রাশেদ।
মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর শর্টফিল্ম করতে কেন মাহমুদুল হককে বেছে নিলেন?-এমন প্রশ্নে পার্থিব রাশেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মানেই যে শুধু গোলাগুলি এরকমটি কিন্তু নয়। আমি চেয়েছি মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরেই অন্যরকম একটা ক্ষত’র গল্প দেখাতে। মাহমুদুল হকের ‘কালো মাফলার’-এ এমনটা আমি খুঁজে পেয়েছি। তাছাড়া মাহমুদুল হককে শর্টফিল্ম করার জন্য বেছে নেয়ার আরেকটা কারণ হল, তার একটি গল্পে আমার ফুল লেন্থ সিনেমা বানানোর ইচ্ছে আছে। আর পূর্ণদৈর্ঘ্য বানানোর আগে এটাকে এক ধরনের হাত মশক বলা যেতে পারে।
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রভাবশালী কথাসাহিত্যিক মাহমুদুল হক। জীবন আমার বোন, কালো বরফ এবং অনুর পাঠশালার মতো কালজয়ী উপন্যাসের রচয়িতা তিনি। তার কোন গল্প বা উপন্যাস থেকে সিনেমা করবেন?-এ বিষয়টি না বললেও ছবিটির প্রি-প্রোডাকশনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন বলে জানান নির্মাতা। এখন চিত্রনাট্য তৈরিতে ব্যস্ত রয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে সদ্য ইউটিউবে মুক্তি পাওয়া ‘কালো মাফলার’ স্বল্পদৈর্ঘ্যটিতে দেখা যায় দুই ভাইয়ের কথোপকথন। ছোটভাই মুক্তিযোদ্ধা। যুদ্ধের সময়ের এক রাতে বিশেষ এক প্রয়োজনে বাড়িতে আসে। ঢাকায় একটা গেরিলা অপারেশন করতে চায় তারা। এজন্য কিছু খোঁজ খবর নেওয়া, কয়েকটি গ্রেনেড এবং একটি সাংকেতিক চিঠি রাখতে আসে ভাইয়ের কাছে। এগুলো নিয়ে দুভাইয়ের কথোপকথনে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা শহরের চিত্র। বাড়ি থেকে চলে যেতে গিয়ে পাড়ার লোকজনের হাতে মারা পড়ে ছোটভাই। এটা দেখে আসে বাবা। বাবার কাছে একথা শুনে বড়ো ভাই বুঝতে পারে তার মুক্তিযোদ্ধা ছোট ভাইকেই চোর ভেবে মেরে ফেলেছে পাড়ার লোক। অতঃপর গ্রেনেডের ঝোলাটা হাতে নিয়ে বের হয়ে যায় বড়ো ভাই। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনোয়ার আনার, শাওন শাহ ও আতিক রহমান।