করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে মার্চের পর সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার সরকারের এক যুগপূর্তিতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপ-কমিটি আয়োজিত শীতার্ত মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।
মন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের সাথে আলোচনা করে পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনায় মার্চে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিতে পারে সরকার।’
সে সময় তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের ধারাবাহিকতায় গত ১২ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রগতির সকল সূচকে যুগান্তকারী মাইলফলক স্পর্শ করছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব সভায় উন্নয়নের রোল মডেল, অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশকে ছাড়িয়ে অগ্রগতির অভূতপূর্ব স্মারক বহন করছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে ও গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপায়নে অর্জিত হয়েছে দৃশ্যমান সফলতা। স্বাধীনভাবে কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।’
করোনার মতে বৈশ্বিক মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বে অনুকরনীয় রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, দৃঢ়তা, সাহসিকতা, সততা ও কর্মনিষ্ঠা আজ বিশ্ব নন্দিত।’
‘‘এক সময়ে তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন ফিরে পেয়েছে ঐতিহ্য।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পাট রপ্তানিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে প্রথম।ইলিশে প্রথম, তৈরি পোষাক রপ্তানিতে দ্বিতীয়, অন্যান্য ক্ষেত্রসহ চাল উৎপাদনে ৪র্থ স্থানে প্রিয় বাংলাদেশ।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় রেখে চলছে অনবদ্য অবদান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশি দেশের সাথে অতীতের অবিশ্বাসের কৃত্রিম দেওয়াল ভেঙে নির্মিত হয়েছে সম্পর্কের নতুন সেতুবন্ধ। সমাধান হয়েছে দীর্ঘদিনের ছিটমহল বিনিময় কার্যক্রম।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক এবং যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই যোগাযোগ খাতে রীতিমতো বিপ্লব সাধিত হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।’
শতভাগ বিদ্যুৎ, পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ি প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দর,বছরের প্রথমদিনে পাঠ্যপুস্তক উৎসব প্রধানমন্ত্রীর অবদান বলেও জানান।
ওবায়দুল কাদের মনে করেন, সরকারের পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু সরকারের গৃহীত নীতি এবং পরিকল্পনা থাকবে চলমান, ভিন্ন ভিন্ন দল সরকারে আসতে পারে তবে রাষ্ট্রের লক্ষ্য এবং অর্জনের ধারাবাহিকতা থাকবে গতিশীল।
তিনি বলেন, প্রতিহিংসা থাকবেনা উন্নয়নে। উন্নয়ন প্রবাহমান জলধারার মতো।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, যতক্ষণ শেখ হাসিনা আছেন জনমানুষের পাশে ততক্ষণ কোনো অপশক্তিই দেশকে পিছিয়ে দিতে পারবে না।
সম্প্রতি নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মির্জা কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দলীয় সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ দলে অপরিহার্য নয়।’
‘‘কোন বিশেষ ক্ষেত্রে কাউকে কোন ধরনের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। দলের শৃঙ্খলা ভাঙ্গার অভিযোগে যে কোন সিদ্ধান্ত দলীয় সভাপতি নিতে পরবেন। শেখ হাসিনার ঊর্ধ্বে কেউ নয়, দল করলে সবাইকে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।’’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।