ট্যাক্সিতে কুড়িয়ে পাওয়া ক্যামেরায় ফ্রেমবন্দি করেছিলেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়কে। আগুন্তুক তরুণের ক্লিক পছন্দ করেছিলেন পথের পাঁচালীর পরিচালক। পিঠ চাপড়ে বলেছিলেন ‘তুমি তো আমার অ্যাঙ্গেল মেরে দিয়েছো হে! ছবি তোলো, ছবি তোলো।’-এরপর আর পিছু হটেন নি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ক্যামেরায় চোখ ছিলো তার!
বলছি প্রখ্যাত আলোকচিত্রী নিমাই ঘোষের কথা। যিনি টানা ২৫ বছর সত্যজিৎ রায়ের (সত্যজিৎ-এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত) অদ্বিতীয় আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করেছেন। বুধবার (২৫ মার্চ) ৮৬ বছর বয়সে তিনি থামলেন। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তাঁর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ছোট ভাই চিত্ত ঘোষের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন নিমাই ঘোষ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
ভারতে লকডাউনের কারণে একসঙ্গে শেষকৃত্য করতে ২০ জনের বেশির যাওয়ার নিয়ম নেই। তাঁর একমাত্র ছেলে রয়েছেন মুম্বাই। লকডাউনের কারণে বাবাকে শেষ দেখাও দেখতে পারেননি ছেলে। বুধবার দুপুরে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি জানান, এই বৃদ্ধ বয়সেও ছবি তোলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন নিমাই ঘোষ। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
সত্যজিৎ রায়ের এই বাক্যটাই বদলে দিয়েছিল নিমাই ঘোষের জীবন। স্থিরচিত্রগ্রাহক হিসেবে সত্যজিতের সঙ্গে কাজ করেছেন ‘গুপি গায়েন বাঘা বায়েন’ থেকে ‘আগন্তুক’-এ। এছাড়া মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, অপর্ণা সেনের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ তিনি। ২০১০ সালে পদ্মশ্রী সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।