চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মানুষ প্রকৃতির উপর ‘আত্মঘাতী যুদ্ধ’ চালাচ্ছে: জাতিসংঘ মহাসচিব

মানুষ প্রকৃতির উপর ‘আত্মঘাতী যুদ্ধ’ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন: আমাদের গ্রহ ভেঙে পড়েছে।

বুধবার পরিবেশ নিয়ে বিবিসিকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি।

মানবিকতা আজ প্রকৃতিক বিশ্বের উপর আত্মঘাতী যুদ্ধ পরিচালনা করছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রকৃতির ওপর যে ব্যবহার করা হয় প্রকৃতি শক্তি সঞ্চয় করে তা সর্বদা তা ফিরিয়ে দেয়।

জাতিসংঘের বৈশ্বিক মিশনের কেন্দ্রবিন্দুতে জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবেলা করার ঘোষণা দেন তিনি।

‘স্টেট অফ দ্য প্ল্যানেট’ শিরোনামের একটি ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন, কার্বন নির্গমনকে নিট জিরো বা প্রকৃত শুন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে একটি বিশ্ব জোট গঠন করা হবে জাতিসংঘের প্রধান লক্ষ্য।

নিট জিরো বলতে যতদূর সম্ভব গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করা এবং বায়ুমণ্ডল থেকে সমতুল্য পরিমাণ অপসারণ ভারসাম্য বজায়ে রাখা।

জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন: প্রতিটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি, শহর এবং দেশকে ২০২৫ সালের মধ্যে প্ল্যান গ্রহণের মাধ্যমে নির্গমন নিট জিরো করতে হবে। আর এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য তাদের এখনই সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার বলে মনে করেন তিনি।

জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ২০১০ এর তুলনায় আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক নির্গমনকে ৪৫% কমানো হবে।

মহাসচিব বিবিসিকে বলেন, বিজ্ঞান পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে যে যদি বিশ্ব এখন থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবছর জীবাশ্ম জ্বালানির উত্পাদন ৬% না কমিয়ে দেয়, তবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এই শতাব্দীতে তাপমাত্রা তিন থেকে পাঁচ ডিগ্রি বৃদ্ধি পাবে। এর প্রভাব ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে অনুভূত হচ্ছে। তাপদাহ, বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং হারিকেন স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে বলে তিনি সতর্ক করেন। জীববৈচিত্র্য ভেঙে যাচ্ছে, মরুভূমিগুলি আরও ছড়িয়ে পড়ছে, মহাসাগরগুলি প্লাস্টিকের বর্জ্য নিয়ে শ্বাসরোধ করছে।

তিনি স্বীকার করেন যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ১১০ টিরও বেশি দেশ এই শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ কার্বন নিরপেক্ষ হয়ে উঠতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। আর এই গতিকে একটি আন্দোলনে রূপান্তরিত করতে চান তিনি।  প্রযুক্তি আমাদের লক্ষ্য পৌঁছাতে সাহায্য করবে বলে বিশ্বাস করেন মহাসচিব।

তিনি বলেন প্লানেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সমাপ্তির সময় এসেছে। আমাদের অবশ্যই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে এবং প্রকৃতির সাথে পুনর্মিলন করতে হবে।