প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ অবৈধ মানব পাচারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করেছে। মানবপাচার রোধে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স।
বুধবার সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, অবৈধভাবে মানবপাচারের বিষয়টি আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মানবপাচার প্রতিরোধ সংক্রান্ত কমিটির সভা প্রতি মাসে অনুষ্ঠিত হয়। মানবপাচার বিশেষ করে নারী ও শিশু পাচার সংক্রান্ত বিচারাধীন মামলার অগ্রগতি মনিটর করার বিষয় কমিটিতে পর্যালোচনা হয়। মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেনন্স’ নীতি গ্রহণ করতে সকল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা তৎপরতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মানবপাচার রোধে পুলিশ কর্তৃক গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে এবং অপরাধ প্রবণ এলাকায় টহল ডিউটি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ার লক্ষ্যে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
‘এছাড়া মানব পাচারের মামলাগুলো তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেফতার কার্যক্রম মনিটরি করার জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে একটি বিশেষ সেল কাজ করছে।’
মানবপাচারকারীদের অর্থের লেনদেন বন্ধ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মোবাইল কোম্পানিগুলোর সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা লেনদেনের ওপর নজরদারি করার জন্য মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলেও তিনি জনান।
শেখ হাসিনা আরোও বলেন, পুলিশের ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম-এ মানব পাচার সংক্রান্ত মামলা ও অপরাধীদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ইনপুট দেয়া হচ্ছে, যার মাধ্যমে সারাদেশের পুলিশ ইউনিটগুলোর মধ্যে দ্রুত মানবপাচার সংক্রান্ত তথ্যাদি আদান প্রদান সহজতর হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে পাচারকৃত বাংলাদেশী নাগরিকদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা এবং মানব পাচাররোধে এতদাঞ্চলের দেশসমূহ যাতে সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারে এ জন্য সর্বাত্মক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মানবপাচার প্রতিরোধ ও আইনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবপাচার প্রতিরোধে প্রতিটি জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কাউন্টার ট্রাফিকিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমনের লক্ষ্যে সরকার গত ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারিতে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন প্রণয়ন করেছে। এতে মানবপাচারের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।