চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

মাদ্রাসাসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কন্যারা নিরাপদে থাকুক

দুর্বৃত্তের আগুনে ঝলসে যাওয়া ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির অবস্থার গুরুতর অবনতি হওয়ায় তাকে সোমবার সকালে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানিয়েছেন তার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডাক্তার।

মারাত্মক আহত নুসরাতের জন্য উদ্বেগ জানাচ্ছে সারাদেশের মানুষ। সামাজিক মাধ্যমে তার সুস্থতা আর তার এই অবস্থার জন্য দায়িদের শাস্তির জন্য দাবি উঠছে। ঘটনার সূত্রপাত ১৭ মার্চ ওই শিক্ষার্থীকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজউদ্দৌলাকে আটক করেছিল পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ অধ্যক্ষের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। আরেকটি অংশ নুসরাতের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করে।

এরপরে শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে যায়। তখন তাকে ফুসলে অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রিত কয়েকজন শিক্ষার্থী মাদরাসার ছাদে তুলে গায়ে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক!

একাধারে নুসরাত যৌন হয়রানির শিকার, তারপরে দেশের আইন মেনে বিচার চাওয়াতে প্রাণঘাতি অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার। এখানে একটি বিষয় লক্ষ্যনীয়, তা হচ্ছে ক্ষমতাধরদের ক্ষমতার অপব্যবহার আর আইনের শাসনকে উপেক্ষা করা। প্রভাবশালী ওই অভিযুক্ত মাদরাসা অধ্যক্ষ তার পদ-পদবির ক্ষমতা বলে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে যৌন হয়রানির সাহস পেয়েছে, আবার তার শক্তিতে বলিয়ান হয়ে তার সহযোগী বা সমর্থকরা প্রাণঘাতি হামলা করেছে শিক্ষার্থী নুসরাতের উপরে।

দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী এবং সশস্ত্র বাহিনী থেকে শুরু করে কৃষিকাজে নারীদের উজ্জ্বল উপস্থিতি দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। সেসময়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নুসরাতের উপরে এধরণের আচরণ/হামলা আমাদের ভাবাচ্ছে। মাদ্রাসাসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কন্যা শিশু ও শিক্ষার্থীদের জন্য কতোটা নিরাপদ, তা আমাদের আরও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার। আশাকরি শিক্ষার্থী নুসরাতের এই ঘটনাকে একটি চূড়ান্ত উদাহরণ ধরে বিভিন্ন দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা এবং কন্যাদের নিরাপত্তায় কাজ করে যাবেন।