মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং জঙ্গি দমনে সারাবিশ্বে রোল মডেল সত্ত্বেও নিজের দায়িত্বকালীন ৫ বছরে মাদক ও জঙ্গি নির্মূল সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।
শনিবার দুপুরে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮’ উপলক্ষ্যে পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
আইজিপি বলেন, মাদক নির্মূল করতে পারিনি, জঙ্গিও নির্মূল করতে পারিনি। কারণ দুটোই আসক্তি।
মাদকে বর্তমানে সবচেয়ে বড় সমস্যা ইয়াবা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কক্সবাজার এলাকায় এতো বড় সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা প্রবেশ করে যা বন্ধ করা কঠিন। তারপরেও ইয়াবা প্রবেশ ঠেকাতে যথেষ্ট সফলতা রয়েছে। গত এক বছরে মাদক সংক্রান্ত ২ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৪টি মামলা হয়েছে। গ্রেফতার আছে কয়েক হাজার।
শুধু আইন প্রয়োগ করে পুলিশ দিয়ে মাদক ঠেকানো সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
আইজিপি বলেন, পুলিশের কোন সদস্য যেন মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে নজরদারী রয়েছে। কেউ জড়িত হলে সাধারণ মানুষের মতোই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। নির্দিষ্ট কি পরিমাণ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেই পরিসংখ্যানটা এই মূহুর্তে নেই, তবে সেই সংখ্যাটা খুবই কম।
গত এক বছরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে ভাল উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান হামলা পরবর্তি সময়ে নতুন করে জঙ্গিবাদের যে উত্থান হয়েছিল, এরপর আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দিতে সক্ষম হয়েছি।
২০১৭ সালে পুলিশের অভিযানের সময় ৫৭ জন সঙ্গি সুইসাইডাল ভেস্টে আত্মাহুতি দিয়েছে। একশ’র বেশি জঙ্গি গ্রেফতার হয়েছে। জঙ্গি দমনে পুলিশের অর্জন শুধু দেশেই নয় বিদেশেও প্রশংসিত হয়েছে।
এছাড়া অন্যান্য ট্রেডিশনাল ক্রাইমও অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে ১ লাখ ৮১ হাজার ১৬৮ টি মামলা দায়ের হয়েছে, ২০১৭ সালে সেই পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার ৫২৯ টিতে।
অস্ত্র, মাদকসহ বিভিন্ন উদ্ধারের হার বেড়ে যাওয়ায় মামলার পরিমাণ বেড়েছে। পুলিশের সক্ষমতা ও কার্যক্রম বৃদ্ধির কারণে উদ্ধার বেড়েছে। উদ্ধারের পরিমান বাদ দিলে ট্রাডিশনাল ক্রাইম তুলনামূলক কমেছে।
সংবাদ সম্মেলনের আগে পুলিশ সদর দফতরের নবনির্মিত মিডিয়া সেন্টারের উদ্বোধন করেন শহীদুল হক। পরে বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের নিয়ে মিডিয়া সেন্টার ঘুরে দেখেন পুলিশ প্রধান।