রুশ বাহিনীর সহায়তায় ঐতিহাসিক নগরী পালমিরায় পুরো নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা
করেছে সিরিয়ার সেনাবাহিনী। রোববার পালমিরা থেকে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক
স্টেটকে(আইএস) তাড়িয়ে দিয়ে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় সরকারি বাহিনী।
গত বছরের মে মাসে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ পালমিরা ও সংলগ্ন আধুনিক শহরটি দখল করে নিয়েছিল আইএস।
দখল
করার পরপরই আইএস শহরটির রোমান ধ্বংসাবশেষের মধ্যে অবস্থিত ২০০০ বছরের
পুরনো দুটি মন্দির, একটি তোরণ ও কয়েকটি স্তম্ভ গুঁড়িয়ে দেয়। এতে
বিশ্বব্যাপী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
ঐহিতহাসিক পালমিরাকে বলা হয় ‘মরুভূমির নববধূ’। যাকে কেন্দ্র করে
প্রতিবছর অসংখ্য দর্শনার্থী সিরিয়া যেত। কিন্তু ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর
সেটা বন্ধ হয়ে যায়।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা
জানিয়েছে, রোমান আমলের ধ্বংসাবশেষের পশ্চিম দিকের একটি পাহাড়ের উপর
পুনর্নির্মিত ১৩০০ শতকের একটি দুর্গের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সরকারী বাহিনী।
সিরিয়ার
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, পালমিরায় রুশ বিমান
হামলার সমর্থন নিয়ে সরকারি বাহিনীগুলো আইএসের সঙ্গে তীব্র লড়াই করেছে।
সরকারি বাহিনী শহরের পশ্চিম প্রান্তের সিরিয়াতেল পাহাড় দখল করে নেয়। এর
কিছুক্ষণের মধ্যে কাছের কালাত শিরকুহ বা কালাত ইবন মান দুর্গটির নিয়ন্ত্রণ
নেয় সরকারি বাহিনী।
সরকারপন্থী আল মায়াদ্বিন টেলিভিশন জানিয়েছে, ১৫০
মিটার উঁচু একটি পাহাড়ের ওপর অবস্থিত দুর্গটি থেকে পুরো প্রাচীন রোমান
নগরীটি নজরে পড়ে। কৌশলগতভাবে এর অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রিটেনভিক্তিক
মানবাধিকার সংগঠন ‘সিরিয়ান অবজাভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানায়, রোববার
সকালেও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে পরে শহর ছেড়ে পালিয়ে যায় আইএস
জঙ্গিরা।
গত কয়েকমাসে রাশিয়ার বিমান হামলার সহায়তা ব্যাপক সাফল্য পায়
সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। তবে চলতি মাসের শুরুর দিকে সিরিয়া থেকে সৈন্য
ফিরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেই সাথে তিনি
অবশ্য এটাও বলে রেখেছন যে, প্রয়োজনে যেকোনো সময় সিরিয়ায় ফিরে আসবে রুশ
বাহিনী।
জাতিসংঘের হিসেব মতে, গত পাঁচ বছরের গৃহযুদ্ধে সাড়ে চার লাখের বেশি সিরিয়ান নিহত হয়। এই সময়ে আহত ও দেশছাড়া হয় অসংখ্য মানুষ।