একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে গত ৪ দিনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ৪ হাজার ২৩ জন। এতে আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে ১২ কোটি ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, উৎসব-উদ্দীপনার মাধ্যমে নেতাকর্মীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। নির্বাচনও উৎসব মুখর পরিবেশে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশও সৃষ্টি হয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তফসিলও পেছানো হয়েছে।
‘‘আমরা প্রায় চার হাজারের বেশী মনোনয়ন ফরম বিতরণ করেছি। এবার আমরা প্রত্যাশার বাইরেও মনোনয়ন ফরম বিতরণ করেছি। এটা প্রায় ৪ হাজার ২৩টি হবে। আজকে বিতরণ শেষ হলেও আগামীকাল পর্যন্ত জমা নেওয়া হবে।’’
হানিফ বলেন, এই মনোনয়ন ফরম বিতরণের জন্য আমাদের এখানে উৎসমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছিলেন। গত চার দিন ধরে তারা এখানে একটা উৎসমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করেছিলেন। সেই কারণে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামের কারণে কিছুটা জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছিল। যারা এই জনদুর্ভোগে কষ্ট পেয়েছেন তাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করছি। অনিচ্ছাকৃত এই জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হওয়ার জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো, যাতে আর এই ধরনের আর কোন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়।
কতগুলো ফরম জমা পড়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো চলমান আছে। যদিও আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত এটার সময়সীমা নির্ধারণ ছিল। তবে অনেকেই আসতে পারেন নাই। অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন। ফরম সংগ্রহ করে জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কিছু তথ্য জোগাড় করতে হয়তো বেশি সময় লেগেছে। সেই কারণে যারা জমা দিতে পারেন নাই তাদের ফরম জমা নেওয়ার জন্য আমাদের দপ্তর আগামীকালকেও খোলা থাকবে।
কবে নাগাদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, আমাদের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড আছে। আমাদের মনোনয়ন বোর্ড প্রার্থী যাচাই-বাছাই করেন। প্রার্থীদের বাছাই শেষ করার পরেই মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ যদি এককভাবে নির্বাচন করতো, তাহলে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বাছাইপর্ব শেষ করেই চূড়ান্ত ঘোষণা করা যেতো। এখানে যেহেতু আমাদের সাথে জোট আছে, বড় জোট জোট আছে এবং আরও দুই একটিসহ যুক্তফ্রন্ট আছে, তারা আওয়ামী লীগের সাথে জোটগতভাবে নির্বাচন করতে পারে।সেসব বিবেচনা করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীতা চূড়ান্ত করার পর অন্যান্য যারা জোটে আছে, তাদের প্রার্থীতা চূড়ান্ত করার পর প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।
হানিফ বলেন, সার্বিকভাবেই বেশকিছু কিছুদিন সময় লাগবে। আমরা আশা করছি, ২৮ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার নির্বাচন কমিশনের যে সময় ধার্য আছে তার অন্তত দুই তিন দিন আগেই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করে ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দিপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধরী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আখতারুজ্জামান প্রমুখ।
নির্বাচনের প্রথম তফসিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার (৯ নভেম্বর) থেকে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় হতে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়।
টানা ৪ দিন যাবত ৮ বিভাগের জন্য পৃথক পৃথক ৮টি বুথ থেকে সর্বমোট ৪ হাজার ২৩ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
মনোনয়ন বিতরণের শেষ দিন সোমবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ৩২৩ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। তবে মঙ্গলবারও মনোনয়ন ফরম জমা নেয়া হবে।
শেষ দিনে ঢাকা বিভাগে ৯০টি, রাজশাহী বিভাগে ২৯টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮টি, রংপুর বিভাগে ২৬টি, সিলেট বিভাগে ৭টি, বরিশাল বিভাগে ৩০টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৬টি ও খুলনা বিভাগে ৪৬টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করা হয়েছে।