৪৫ টাকা ও তদূর্ধ্ব মূল্যে বিদ্যমান মধ্যম ও উচ্চ মূল্যস্তরের সিগারেটের ব্রান্ডসমূহের জন্য কোন মূল্য নির্ধারণ না করে মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি উৎপাদকদের ইচ্ছাধীন রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। এছাড়া নিম্ন মূল্যস্তরের দেশিয় ব্রান্ডের সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকার মূল্য বিদ্যমান ২৩ টাকা হতে বৃদ্ধি করে ২৭ টাকা নির্ধারণ এবং সম্পূরক শুল্ক হার ৫০ শতাংশ হতে বৃদ্ধি করে ৫২ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছেন তিনি।
তবে, নিম্ন মূল্যস্তরের আন্তর্জাতিক ব্রান্ডের সিগারেটের ক্ষেত্রে বর্তমানে পৃথক কোন মূল্যস্তর না থাকায় এ ধরনের আন্তর্জাতিক ব্রান্ডের সিগারেটের প্রতি ১০ শলাকার মূল্য ৩৫ টাকা নির্ধারণসহ সম্পূরক শুল্ক ৫৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন: বাংলাদেশ প্রথম স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। বিশ্বব্যাপী ধুমপান বিরোধী রাষ্ট্রীয় নীতির সাথে সামঞ্জস্য বিধান, স্বাস্থ্যঝুঁকিহেতু তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনার কারণে এ খাতে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘদিন যাবৎ সিগারেটের উপর হতে কর আদায়ের ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক সিগারেটের মূল্যসীমা নির্ধারণ করে দেয়ার একটি রেওয়াজ প্রচলিত ছিল- যা বাজার অর্থনীতিতে মোটেও কাম্য নয়। এ কারণে, গত দু’বছরে সিগারেটের মূল্য নির্ধারণের রীতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। তবে, ভবিষ্যতে ক্রমান্বয়ে মূল্য নির্বিশেষে একটি একক করহারে উপনীত হওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি।
এমএ মুহিত বলেন: বিগত কয়েক বছরের নিম্ন মূল্যস্তরের সিগারেটের বিভিন্ন কোম্পানির মার্কেট শেয়ার বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, দেশিয় কোম্পানিগুলো ক্রমান্বয়ে তাদের বাজার হারাচ্ছে এবং বহুজাতিক কোম্পানি সেটি দখল করে নিচ্ছে যা দেশিয় শিল্পের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। এই নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামী দু’ বছরের মধ্যে দেশিয় কোম্পানিগুলোর অস্তিত্ব আর থাকবে না। তাছাড়া বর্তমানে বহুজাতিক কোম্পানি কর্তৃক নিম্ন মূল্যস্তরে যে সকল ব্রান্ডের সিগারেট বাজারজাত করা হয় সে সকল ব্রান্ড বিশ্বের অন্যান্য দেশে জনপ্রিয় ব্রান্ড হিসেবে পরিচিত। ফলে এক্ষেত্রে একটি অসম প্রতিযোগিতা বিদ্যমান রয়েছে। এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দেশিয় শিল্প সুরক্ষা এবং ক্রমান্বয়ে একটি একক হারে উপনীত হওয়ার লক্ষ্যে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন: স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিড়ি–সিগারেটের মত ভয়াবহ আরেকটি নতুন উদ্ভাবিত পণ্য হল ই-সিগারেট। বর্তমানে ই-সিগারেট অর্থাৎ Electronic Nicotine Delivery System (ENDS) এর ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপেক্ষাকৃত সচ্ছল ও তরুণ ধুমপায়ীদের মধ্যে এর ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পণ্যটির বর্তমান শুল্কহার মাত্র ১০ শতাংশ। অন্যদিকে ই-সিগারেট সেবনের জন্য রিফিল প্রয়োজন হয় -যার শুল্ক হারও ১০ শতাংশ। এ কারণে উল্লিখিত দুটি পণ্যের পৃথক দুটি এইচ এস কোড নির্ধারণপূর্বক আমদানি শুল্কহার ২৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করছি। একই সাথে এ দুটি পণ্যের উপর ১০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব করছি।