আজগুবি সব প্রতীক নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের ব্যালট পেপার। নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে এমন অনেক কিছু আছে যা অতীতের কোনো নির্বাচনে ছিলো না। প্রার্থী সংখ্যা অনেক বেড়ে যাওয়ায় প্রতীক সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ করতে গিয়ে কিছু প্রতীক আনা হয়েছে নতুন প্রজন্মের ভোটাররা যার নামই শুনেননি কখনও।
মেয়র প্রার্থীদের জন্য নির্বাচন কমিশন ১২ টি প্রতীক বরাদ্দ করেছিলো। অতিরিক্ত প্রতীক হিসেবে রাখা হয় আরো ১২টি।
প্রতীক বরাদ্দের পর মেয়র প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে গিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তিতে পড়েছেন। বিপাকেও পড়তে হয় কাউকে কাউকে।
জায়গা ভেদে মেয়র পদে ব্যালট পেপারে রসালো ফল ‘কমলালেবু’র সঙ্গে থাকবে জিভে জল আনা ‘ইলিশ মাছ’ কিংবা মজাদার ‘কেক’। কারো জন্য আঙুলের ‘আংটি’ থাকলে অন্য প্রার্থীর জন্য থাকবে হাতের ‘ক্রিকেট ব্যাট’। ‘টেবিল’ যেমন আছে তেমনই আছে ‘টেবিল ঘড়ি’। গণপরিবহন ‘বাস’ এবং আগুন জ্বালানোর ‘দিয়াশলাই’ও থাকবে। আরো থাকবে পাখির রাজা ‘ঈগল’ এর সঙ্গে পেখম মেলা ‘ময়ূর’। পুরনো প্রতীক ‘হাতি’র সঙ্গে যোগ হয়েছে ‘ডিস এন্টেনা’। ‘ল্যাপটপ’ও থাকছে ব্যালট পেপারে।
তবে ভোটাররা কিছুটা বিপাকে পড়তে পারেন ‘চরকা’ এবং ‘টেলিস্কোপ’ নিয়ে। ‘চরকা’ দেখে মাথা চক্কর দিয়ে উঠলেও অবশ্য সমস্যা নেই। পানি থাকুক বা না থাকুক, ব্যালট পেপারে থাকছে পানির ‘মগ’।
শাকসবজিও বাদ পড়েনি প্রতীক থেকে। তবে ‘লাউ’কে অনেকে ‘সাধের লাউ’ বলছেন।
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও থাকছে মেয়র পদের ব্যালট পেপারে। এরকম কিছু প্রতীক ‘কলমদানি’, ‘সোফা’ এবং ছেলেদের পোশাক ‘শার্ট’। এমনকি ‘চিতা বাঘ’, আর ‘জাহাজ’ আছে প্রতীকের তালিকায়।
সংরক্ষিত আসনের প্রতীক: সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য এমন কিছু প্রতীক রাখা হয়েছে যে কারণে প্রচারণার সময় নারী প্রার্থীদের কিছুটা বিব্রত হতে হয়েছে। কেউ কেউ প্রতীক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নির্বাচন থেকে সরেও দাাঁড়িয়েছেন।
বর্তমান যুগে এসেও নারীদের শুধু ঘরের ভেতরের মানুষ হিসেবে বিবেচনা করে নির্বাচন কমিশন যেসব প্রতীক বরাদ্দ করেছে তার মধ্যে আছে: ‘প্রেসার কুকার’ ‘ফ্রাইং প্যান’, ‘কেটলি’, ‘শিল পাটা’, ‘টিস্যু বক্স’, ‘মোড়া’, ‘স্টিল আলমারি’, ‘গ্লাস’, ‘বৈয়ম’, ‘ভ্যানিটি ব্যাগ’, ‘হারমোনিয়াম’। ‘বাঁশি’ এবং খাঁচার পাখি ‘টিয়ে ‘ও থাকছে।
শিশুদের দোল খাওয়ার ‘দোলনা ’ আছে প্রতীকে হিসেবে। তবে নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য সবচেয়ে বিরক্তির প্রতীক ছিলো ‘মুলা’। এছাড়াও আছে ‘পান পাতা’, ‘পিঞ্জর’ এবং ‘ঝুমঝুমি’।
সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে বরাদ্দ করা মোট প্রতীক সংখ্যা ১০। অতিরিক্ত ৮টিসহ মোট ১৮।
সাধারণ কাউন্সিলর: সাধারণ আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীরাও রেহাই পাননি প্রতীক নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে। প্রচারণা চালাতে গিয়ে কখনও কখনও হাস্যরসের শিকার হয়েছেন তারা। এরকম কিছু প্রতীক ‘মিষ্টি কুমড়া,’ ‘কাঁটা চামচ’, এবং ‘করাত’। ভাগ্যবানরা ঐতিহ্যবাহী প্রতীক ‘প্রদীপ’, ‘ঠেলাগাড়ি’ এবং ‘ট্রাক্টর’ পেলেও কারো কারো জন্য বিপাক নিয়ে এসেছে ‘ক্রিসমাস ট্রি’, ‘স্ট্রবেরি’, ‘হেডফোন’, ‘এয়ারকন্ডিশনার’, ‘ভায়োলিন’ এবং ‘ড্রেসিং টেবিল’ এর মতো প্রতীক।
এছাড়াও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যালট পেপারে থাকবে ‘ঘুড়ি’, ‘লাটিম’, ‘ঝুড়ি’, মাথার ‘ক্যাপ’, ‘রেডিও’ আর ‘সূর্যমুখী’ ফুল।
সাধারণ কাউন্সিলর পদে মোট প্রতীক ২২টি। এর মধ্যে মূল বরাদ্দ এক ডজন, অতিরিক্ত আরো ১০টি।
ভোটে অভিজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনে প্রতীক কিছু না কিছু প্রভাব রাখে। কখনও কখনও ‘হাস্যকর’ প্রতীকও নিয়ে আসতে পারে অনেক ভোট।