মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার প্রায় দু’মাস (৫৩ দিন) পর শুক্রবার ঘরের মাঠ অ্যারেনা কোন্ডায় নতুন খেলোয়াড় নিয়ে অনুশীলন করেছে শ্যাপেকোয়েন্সের খেলোয়াড়রা।
অনুশীলনে যোগ দেন আকস্মিকভাবে ওই দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া খেলোয়াড় অ্যালান রাসেল ও নেটো। এদিন শ্যাপেকোয়েন্সের অনুশীলন দেখতে তাদের ঘরের মাঠে উপস্থিত ছিল কয়েকশ সমর্থক।
শনিবার রাতে ব্রাজিলিয়ান লিগ চ্যাম্পিয়ন্স পালমেইরাসের বিপক্ষে মাঠে নামবে শ্যাপেকোয়েন্স। বিমান দুর্ঘটনার পর এটাই হবে ক্লাব পর্যায়ে শ্যাপেকোয়েন্সের প্রথম ফুটবল ম্যাচ।
এ ম্যাচকে ঘিরেই শুক্রবার অনুশীলন করে খেলোয়াড়রা। ধারে খেলতে এসে দলে যোগ দিয়েছেন নতুন ১৭ জন খেলোয়াড়। দলটির নতুন কোচ ভ্যাগনার ম্যানচিনি। দলের নেতৃত্বে থাকবেন নেটো। তাদের মধ্যে একজন ওয়েলিংটন পলিস্টা যিনি ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেডে খেলে এসেছেন।
শ্যাপেকোয়েন্সের অনুশীলনে খেলোয়াড়রা বেশ কিছুক্ষণ ঘাম ঝরান, সামনের ম্যাচ ও আগামীদিনের ক্লাব ফুটবলে কিভাবে ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলবে সে ব্যাপারেও একটি দিক নির্দেশনা ও টিম মিটিং করেন। সব মিলিয়ে ট্রেনিং সেশনটি ছিল অাবেগ আর ভালোবাসায় আপ্লুত। অনুশীলন শেষে সমর্থকদের ভালোবাসা ও সাথে থাকার জন্য তাদের প্রতি হাত উঠিয়ে অভিনন্দন জানান খেলোয়াড়রা।
তবে ঘরের মাঠে অনুশীলন করতে এসে ঠিকই হারানো সতীর্থদের খুঁজছিলেন রাসেল নেটোরা। তিনি জানান, ওই মূহুর্তে সবাই দোয়া করছিল যেন বেঁচে ফেরা আসা যায়। এ মাঠেই আমরা একত্রে খেলেছি কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আজ ওরা কেউ নেই।
নেটো বিবিসিকে জানান, আমার যতোদূর মনে আছে বাতাস আর বিমানের ইঞ্জিনের কারণে প্রচুর শব্দ হচ্ছিল। এরপর আমার কিছু মনে নেই। তিনি যখন হাসপাতালে জ্ঞান ফিরে সবাই তাকে বলছিল তুমি খেলতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়েছো। কেউ তাকে সতীর্থদের হারানোর খবরটি ওই মূহুর্তে দেয় নি।
আগামী বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শ্যাপেকোয়েন্স দলের খেলোয়াড়দের পরিবারকে সাহায্য করতে কলম্বিয়ার সাথে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল।
চতুর্থ বিভাগ থেকে মাত্র দুই বছর আগে প্রথম বিভাগে উঠে আসা ব্রাজিলীয় ক্লাবটি রূপকথা লিখেই কোপা সুদামেরিকানার ফাইনালে পা রেখেছিল। কিন্তু স্বপ্নের ঘোর কাটার আগেই এক দুঃস্বপ্নের ছোবলে শেষ হয়ে যায় সব। লাতিন আমেরিকার দ্বিতীয় সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট কোপা সুদামেরিকানার ফাইনালে খেলতে কলম্বিয়ায় যাচ্ছিল শ্যাপেকোয়েন্স দলটি।
লামিয়া এয়ারলাইন্সের ভাড়া করা বিমানে কলম্বিয়ার মেদেলিন শহরে যাওয়ার পথে ২৮ নভেম্বর স্থানীয় সময় রাতে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে মেদেলিন বিমানবন্দর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে একটি পাহাড়ি এলাকায় শ্যাপেকোয়েন্স ফুটবল ক্লাবের ১৯ জন খেলোয়াড়সহ মোট ৮১ জন আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয় বিমানটি। মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় ৭৬ জন নিহত হয়।
ঘটার খবর প্রকাশের পর শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা ফুটবল বিশ্বে।