চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

ভ্রাম্যমাণ আদালতের দণ্ডে অন্তরীণ শিশুদের মুক্তির নির্দেশ হাইকোর্টের

ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া দণ্ডে যশোর ও টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে অন্তরীণ ১২ বছরের নিচের শিশুদের অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।

সেই সাথে ১২ বছরের বেশি থেকে ১৮ বছর বয়সী অন্তরীণ শিশুদের হাইকোর্ট ৬ মাসের জামিন দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার শিশু আদালতে সন্তুষ্টি সাপেক্ষে এদের মুক্তি দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত যেসব মামলায় এসব শিশুদের দণ্ড দিয়েছেন সেসব মামলার নথি সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে আলাদা আলাদাভাবে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে।

‘আইনে মানা, তবু ১২১ শিশুর দণ্ড’ শিরোনামে দৈনিক প্রথম আলোর প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বৃহস্পতিবার রুলসহ এই আদেশ দেন।

আদালত তার রুলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শিশুদের দেওয়া দণ্ড ও আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।

স্বরাষ্ট্র, আইন, জনপ্রশাসন, সমাজকল্যাণ, নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সচিব, র‌্যাবের মহাপরিচালক, টঙ্গী-যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম, র‌্যাব-৩ টিকাটুলীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আক্তারুজ্জামান, র‌্যাব-৪ মিরপুর-১–এর আইন কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদসহ বিবাদিদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে এনে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল হালিম ও ইসরাত হাসান। এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়: ‘শিশু আইনে স্পষ্টই বলা আছে, অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, অপরাধে জড়িত থাকা শিশুর বিচার শুধু শিশু আদালতেই হবে। অথচ ভ্রাম্যমাণ আদালত শিশুদের দণ্ড দিয়ে চলেছেন। এ মুহূর্তে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে ১২১টি শিশুর সন্ধান পাওয়া গেছে, যাদের দণ্ড দিয়েছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এরা তিন মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত মেয়াদে কারাদণ্ড ভোগ করছে।’

‘শিশু আইনের পাশাপাশি হাইকোর্টের একাধিক রায়েও বলা হয়েছে, শিশুর বিরুদ্ধে যেকোনো অভিযোগের বিচার শুধু শিশু আদালতেই হতে হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত দূরের কথা, অধস্তন আদালতের কোনো বিচারক শিশুদের বিচার করলেও তা হবে বেআইনি।’

চলতি বছরের ৩ মে থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১২১ শিশুকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে, যাদের রাখা হয়েছে টঙ্গীর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘এদের মধ্যে ১৭ বছর বয়সী আছে ২৮ জন। ২৬ জনের বয়স ১৬, ২০ জনের বয়স ১৫, ১৬ জনের বয়স ১৪, ১১ জনের বয়স ১২। ৭ জনের বয়স ১৩। বাকি ১২ জনের বয়স ৮ থেকে ১১ বছর। একজনের বয়স উল্লেখ নেই। এছাড়া যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রেও ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত একটি শিশু আছে।’